ঢাকাই শাড়ি কিন্তু নিয়ে আসা চাই—যতবারই ঢাকায় আসেন কলকাতার কাছের মানুষদের যেন এটা নিয়মিত আবদার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই বলছিলেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সম্প্রতি একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের কাজে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকেই একদিন বাংলাদেশি পোশাক পরে সময় দিলেন নকশার জন্য। পরলেন এ দেশের শাড়ি-পোশাক, জানালেন নিজস্ব সাজ ও উৎসবের সাজের কথা।
ঐতিহ্যবাহী কাপড়ে
‘উপহার হিসেবে যদি একটা ঢাকাই শাড়ি কাউকে দেওয়া হয় তার আনন্দ আর দেখে কে!’ বললেন ঋতুপর্ণা। জামদানি, সিল্ক, মসলিন, তাঁতের সুতি শাড়িগুলো আমাদের ঐতিহ্যের ধারক। যখন বাইরে থেকে অতিথি হয়ে কেউ এ দেশে বেড়াতে আসেন, তখন এই শাড়িগুলোই যেন তাঁদের কাছে বাংলাদেশের স্মারক হয়ে ওঠে। কেউ নিজের জন্য কেনেন, কেউ নিয়ে যান প্রিয়জনের জন্য উপহার হিসেবে। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাও তার ব্যতিক্রম নয়। যখনই বাংলাদেশে আসেন, তখনই ঢাকাই শাড়ি কেনেন।
‘আসলে ঢাকাই শাড়ি যে ওখানে (ভারতে) কী জনপ্রিয়, তা আর বলে বোঝানো যাবে না’, বললেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। জানালেন, ঢাকাই শাড়ি বলতে কলকাতায় সাধারণত টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি আর জামদানিকে বোঝানো হয়। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের কাছে অবশ্য জামদানির পরপরই ভালো লাগে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। ঢাকায় এলেই কেনাকাটা করেন আড়ং থেকে। ‘আর মিরপুরের যেখানে অনেক কাতান আর বেনারসি পাওয়া যায়, সেখান থেকে একবার শাড়ি কিনেছিলাম।’ বুঝতে কোনো অসুবিধা হলো না যে তিনি মিরপুরের বেনারসিপল্লির কথা বলছেন।
বাংলাদেশের ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের কাজের খুব ভক্ত এই অভিনেত্রী। ঋতুপর্ণা বললেন, ‘বিবিদি যে তাঁতিদের নিয়ে এত অসাধারণ কাজ করছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আর গামছা দিয়েও যে এত সুন্দর শাড়ি হয়, সেটা বিবিদির শাড়ি দেখেই জানতে পারলাম।’
পূজা উৎসবের সাজে
‘সারা বছর এত ভারী সাজপোশাকে থাকি যে পূজার দিন আর ওগুলো ভালো লাগে না। এদিনটা শুধুই আমার মতো করেই সাজতে চাই।’ বললেন ঋতুপর্ণা। কলকাতার সেরা সব ডিজাইনারই কমবেশি তাঁর বন্ধু। তাই এই ডিজাইনার বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক পোশাক উপহার পেয়ে থাকেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল, ইরানি, মানসীসহ অনেকে। দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন সকালে শাড়ি পরতে ভালোবাসেন। ঋতুপর্ণার কাছে মনে হয় অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি দিতে শাড়ির সত্যি কোনো বিকল্প নেই। এই সময়টাই সোনার হালকা গয়না পরতে ভালোবাসেন। নবমীর সকালে কাঞ্জিভরম বা সিল্ক তাঁর সঙ্গী হয়ে ওঠে। একটা বড় টিপ, লিপস্টিক, ব্লাশঅন আর আইশ্যাডোতে পূর্ণ হয় ঋতুপর্ণার সকালের সাজ। তবে বিকেলবেলায় ভারী সাজপোশাকটাই পছন্দ। এই সময় হয়তো উ
সাধারণে অসাধারণ ঋতুপর্ণা
ইদানীং শুনেছি, কলকাতায় আমাকে ‘ফ্যাশন আইকন’ বলা হয়—কথায় কথায় জানালেন ঋতুপর্ণা। কিন্তু কেন যে তাঁকে আইকন বলা হয়, এটা তিনি ভেবে পান না। হাল ফ্যাশনের প্রতি এই অভিনেত্রীর আগ্রহটা একেবারেই কম। ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রকাশ পায় এমন পোশাক পরতেই বেশি পছন্দ করেন। সেটা শাড়ি বা অন্য যেকোনো পোশাক হতে পারে। পোশাকের ক্ষেত্রে পছন্দের রং কালো, সাদা আর লাল। ভারতের ডিজাইনারদের মধ্যে রীতু কুমারের নকশা করা পোশাক তাঁর খুব পছন্দ। ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে পালাজ্জোর সঙ্গে শার্ট পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন; পাশাপাশি ডেনিম, খাটো স্কার্ট, লম্বা ড্রেসও নিয়মিত পরেন।
পহার পাওয়া কোনো জমকালো পোশাকটা পরে নেন। তখন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সাজটা মনের মতো করে সেজে থাকেন।