ঢাকা: রাখাইন রাজ্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে মিয়ানমার সরকার। সেখানে নিরপেক্ষ কোনো মিডিয়া বা সাহায্য দাতা সংগঠনের প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবে ভিতরে প্রবেশ করতে না পারলেও প্রকৃতপক্ষে কি ঘটছে রোহিঙ্গাদের ভাগ্যে তার কিছুটা হলেও তথ্য মিলছে। তা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে।
অনলাইন ওয়াশিংটন পোস্টে এসব কথা লিখেছেন ম্যাক্স বিয়ারাক। তিনি লিখেছেন, মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি দাবি করেছেন, তার দেশে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ হয়েছে। সেখানে জনজীবন স্বাভাবিক। কিন্তু গত পাঁচ সপ্তাহে রাখাইন থেকে কমপক্ষে ৫ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। এ এক অপ্রত্যাশিত শরণার্থীর প্রবাহ। এ জন্য গত এক সপ্তাহে এক ডজনেরও বেশি রোহিঙ্গার সাক্ষ্য নিয়ে, রাখাইনে অবস্থানরতদের সঙ্গে কথা বলে এটা বলা যেতে পারে, মিয়ানমারের নেতারা রাখাইন নিয়ে হয়তো ভুল তথ্য দিচ্ছেন, না হয় উদ্দেশ্যমুলকভাবে ভুল কথা বলছেন। ম্যাক্স বিয়ারাক লিখেছেন, ২৫ শে আগস্ট মিয়ানমারে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলা চালায় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিরা। এরপর রাখাইনে ‘কিøনজিং অপারেশনস’ শুরু করে সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটন করা হচ্ছে বলে দাবি করে তারা। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, এটা জাতি নিধন। এমন ভয়াবহ অভিযানের ফলে রোহিঙ্গারা বাড়িঘর, দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। ১৯৯৪ সালে রোয়ান্ডায় গণহত্যার পর এই হারে দেশ ছাড়ার ঘটনা দেখা যায় নি আর। তবে গত দু’সপ্তাহে রোহিঙ্গা আসার হার কিছুটা মন্থর হয়েছে। মিয়ানমারে যে পরিস্থিতিতে তারা থাকেন তার চেয়ে শোচনীয় অবস্থায় বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে অবস্থান করছেন এসব মানুষ। যেসব মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা সবাই নানা রকম মর্মপীড়ায় ভুগছেন। তাদের অনেকেই সেনা অভিযানের সময়ে রোহিঙ্গা গ্রামে ছিলেন। ওই সময়ে কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেই তাকে গুলি করা হতো। সেখানে এখন যারা অবস্থান করছেন তারা অনাহারে রয়েছেন। অন্য কয়েক হাজার মানুষ আটকা পড়ে আছে আলেল থান কাইওয়া গ্রামে সমুদ্র সৈকতে। বাংলাদেশে আসার জন্য তারা নৌকার আশায় আছেন। তবে এমন দাবি নিশ্চিত হতে পারে নি ওয়াশিংটন পোস্ট, কারণ অবরুদ্ধ রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি নেই। কিন্তু মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন, স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় রোহিঙ্গাদের ¯্রােত শেষ হয় নি। তারা আরও আছে।