স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ডা. শামসুল আলম খান মিলনের মা সেলিনা আখতার বলেছেন, তাঁর ছেলের হত্যার বিচার না হওয়ায় তিনি লজ্জিত বোধ করেন। জাতি হিসেবে বিবেক বিবর্জিত মনে হয়। তিনি প্রশ্ন করেন, এই হত্যার বিচার করতে সরকার কেন ব্যর্থ হলো, কাদের স্বার্থে এই ব্যর্থতা। শহীদের আত্মা কি তাদের ক্ষমা করবে?
শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কদ্বীপে শহীদ ডা. মিলন সংসদ আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান: শহীদ ডা. মিলন দিবস ২০১৪’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সেলিনা আখতার এ কথা বলেন।
ডা. মিলনের মা বলেন, নব্বই-পরবর্তী সরকারগুলোর ব্যর্থতার কারণে এ দেশে গণতন্ত্র ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। ফলে মিলনের মতো যাঁরা সংগ্রাম করে প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের চাওয়া এখনো বাস্তবায়ন হতে পারেনি।
১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে ঘাতকের গুলিতে নিহত হন মিলন। তাঁর মৃত্যুর পর আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। সেই থেকে প্রতিবছর দিনটি শহীদ ডা. মিলন দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
শহীদ ডা. মিলন সংসদের আলোচনা সভায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশ এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়ে গেছে। এ দেশ এখনো জঙ্গি ও মৌলবাদের বিপদ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। বরং গণতন্ত্রের মুখোশ পরা কোনো কোনো দল এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। তিনি বলেন, মিলন হত্যার বিচার হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, কর্নেল তাহের হত্যাকারী চিহ্নিত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, রাজনীতি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদায় করলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে। কেননা বেগম জিয়া মৌলবাদী, জঙ্গিবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। খালেদা জিয়াই দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক ও হুমকি।
অধ্যাপক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, কর্নেল তাহেরের স্ত্রী ও সাংসদ লুৎফা তাহের, চিকিৎসক নেতা ইকবাল আর্সনাল, মোশতাক হোসেন, মাহবুবুর রহমান, মুনীর উদ্দিন আহমেদ, এম এম আকাশ প্রমুখ।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে আলোচনা সভা, ডা. মিলনের সমাধি ও স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন প্রভৃতি। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে।