শেষ কবে রং করা হয়েছিল মালিকও হয়তো ভুলে গেছেন। সব জানালার কাচই ভাঙা। সামনে-পেছনে নেই কোনো লাইট ও ইন্ডিকেটর। ভাঙাচোরা আসন নোংরা। চলে কচ্ছপ গতিতে। এমন বাসের পেছনে লেখা ‘সড়ক পথে বিমানের ছোয়া’!
গতকাল সোমবার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সড়কে দেখা মিলল এই বাসের। প্রত্যয় ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের এই বাস মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ হয়ে গাবতলী থেকে বাবুবাজার রুটে চলে।
গতকাল কথা হয় এই বাসের যাত্রী রুবেল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা রসিকতা ছাড়া কিছু নয়। বাধ্য হয়ে এমন বাসে উঠি। কারণ এই রুটের অন্য বাসগুলোর অবস্থাও একই। রাজধানীর সব অচল বাস চলে এই রুটে।’
গতকাল মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রুবেলের কথার সত্যতা পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, প্রত্যয় ছাড়াও এই রুটে চলা সব কটি পরিবহনের বাসের অবস্থাই যাচ্ছেতাই।
তবু কীভাবে চলে এমন বাস, জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চালক বলেন, ‘এটা বাসের মালিক ও পুলিশ জানে। আমরা কিছু জানি না।’
গতকাল বেড়িবাঁধ সড়কে লালবাগ জোনের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে দায়িত্ব পালন করছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের সার্জেন্ট মো. জুবরিয়া। লক্কড়-ঝক্কড় এসব বাসের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে তিনি এসেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানেন না। ফোনে ট্রাফিক লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনারের সঙ্গে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘চালকদের কাছে বাসের মূল কাগজপত্র নেই, ফটোকপি আছে।’ সহকারী কমিশনারের বরাত দিয়ে জুবরিয়া বলেন, ‘ডিসি স্যারের অনুমতি ছাড়া এসব বাসের কাগজ চেক করা যাবে না।’
জানতে চাইলে ট্রাফিক দক্ষিণের ডিসি রিফাত রহমান বলেন, আইন অনুযায়ী সার্জেন্টকে কাগজ যাচাই করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এর জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই। তাঁর দাবি, নিয়মিত ওই রুটে চলাচল করা বাসের কাগজপত্র যাচাই করা হয়। রুট পারমিট, ফিটনেস সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকলে জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।