সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে শত নির্যাতন সহ্য করেও ডা. শামারুখ মাহজাবিন সুমি স্বামীর ঘরে পড়ে ছিলেন। পেশায় চিকিৎসক ও সচেতন নাগরিক হয়েও প্রতারক স্বামীকে ছেড়ে আসতে পারেননি। যে কারণে সর্বশেষ তাকে জীবন দিতে হয়েছে। এমন ঘটনা আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটছে। এই অবস্থা থেকে নারীদের বের করে আনতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত এক সেমিনারে জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন। ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের অর্জন ও ব্যর্থতা’ শীর্ষক এক সেমিনার পরিচালনা করেন বিএনপিএস-র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপিএস-র সহ-সভানেত্রী নাট্যশিল্পী আফরোজা বানু। আলোচনায় অংশ নেন নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রেবেকা মমিন, ইউএন উইমেন এর কর্মসূচি সমন্বয়কারী মাহতাবুল হাকিম, উন্নয়নকর্মী নাহিদ সুলতানা, শিক্ষাবিদ মমতাজ জাহান, আদিবাসী নেত্রী চঞ্চনা চাকমা, এডাবের কাওছার আলম কনক, উইমেন ফর উইমেন-এর শামসুন্নাহার, অরণ্য আসলাম প্রমুখ।
এ সময় হুইপ গিনি আরো বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে আমরা অনেকটা অগ্রসর হয়েছি। যা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, নারীদেও বিয়ের বয়স অবশ্যই থাকবে। তবে অনুমতিসাপেক্ষে ১৬ বছরের পর বিয়ের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি আরো দুই টার্ম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন রাখার পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।
সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন বলেন, আর্থিকভাবে নারী প্রতিষ্ঠিত হলে নারী নির্যাতন কমে যাবে। তাই নারীকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে সরকার নানা ধরনের আইন, সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করেছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে তিনি নারী-পুরুষের সম্মিলিত কাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে জানানো হয়, ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে এবং যানবাহন কোথাও নারীর নিরাপত্তা নেই। নিরাপত্তার অভাবে বাল্যবিবাহ বেড়ে গেছে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার কারণে দেশের মোট আয়ের ১৯৩৯ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। যা জিডিপির ২ দশমকি ১২ শতাংশ। বিগত পাঁচ বছরে ৯৩ হাজার ৬৮৬টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। শুধু নারী নয়, শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।