রোহিঙ্গাদের উপর দমন-পীড়ন ও নৃশংসতা চালানোর কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্যে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নিধন চালিয়ে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সোমবার এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানায় এইচআরডব্লিউ।
এদিকে এইচআরডব্লিউ এমন এক সময়ে এ আহ্বান জানিয়েছে যখন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বসার প্রস্তুতি চলছে।রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মম নিপীড়নের কারণে শরণার্থীর যে ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করছে তাতে জরুরি মানবিক সহায়তার বিষয়টি মারাত্মক রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন শরণার্থীদের সহায়তা দিতে ত্রানগ্রুপগুলো তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু প্রায় সবধরণের ত্রাণের অপ্রতুলতার কারণে অধিকাংশ রোহিঙ্গাকেই চরম দুর্দশার মধ্যদিয়ে সময় পার করতে হচ্ছে।
এদিকে রবিবার মিয়ানমার সরকার আভাস দিয়েছে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যেসব রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে তাদের তারা ফেরত নেবে না। কারণ এসব রোহিঙ্গার সঙ্গে সন্ত্রাসীদের যোগসাজশ রয়েছে বলে দেশটির সরকার দাবি করছে। এসব সন্ত্রাসী গত আগস্টে রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযানে নামে।
তবে এইচআরডব্লিউ বাস্তুচ্যুত এসব রোহিঙ্গার নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সংস্থাটি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান নৃশংসতা চালানোর দায়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানায়।
সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘জাতিগত নিধন’ অভিযান বন্ধ করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচিত দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অবরোধ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। সংস্থাটি রোহিঙ্গা সংকটকে অগ্রাধিকার দিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয় ও বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারীদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপ বাড়াতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিষয়টি উত্থাপন করবেন।