বাবার কোলে ছটফট করছে শিশুটি

Slider গ্রাম বাংলা টপ নিউজ

 

d895bb948ed81a8146dec19fbb58ad8a-59bed78260397

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সাড়ে তিন বছরের রিদুয়ানের চোখেমুখে আতঙ্ক। শিশুটির মুখের বাম পাশে পোড়া ক্ষত। যন্ত্রণায় বাবার কোলে কাঁদছে সে। ছেলেকে নিয়ে কোথায় আশ্রয় নেবেন, জানেন না মো. ইসমাঈল (২৭)। গতকাল রোববার ভোরে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে নৌকায় করে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলারচরে ঢুকেছেন তিনি।

কোলের শিশু ছাড়া ইসমাঈলের আর কেউ নেই। তাঁর বাড়ি মিয়ানমারের মংডু শহরের নাইচং গ্রামে। তিনি কাঠুরিয়া। ১১ সেপ্টেম্বর সকালে তাঁদের গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ঢোকে। একের পর এক বাড়িতে আগুন দেয়। তখন ইসমাঈল ঘরে ছিলেন। স্ত্রী আর দুই সন্তাসহ চার সদস্যের পরিবার তাঁর। ঘরে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় ছেলে রিদুয়ানকে কোলে নিয়ে তিনি দৌড়ে বেরিয়ে যান। স্ত্রী ধলু বেগম ও ১৬ মাস বয়সী ছেলে রবিউল আগুনে পুড়ে মারা যায়।

বাড়ি পোড়ার দৃশ্য গ্রামের পাশের এক পাহাড় থেকে লুকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না ইসমাঈলের। আগুনে ছেলের গালের এক পাশ পুড়ে গেছে, প্রথমে খেয়াল করেননি তিনি। পরে যখন দেখলেন, তখন একটি বাড়ি থেকে টুথপেস্ট নিয়ে তা ছেলের গালে লাগান। এর মধ্যে খবর পান সেনাসদস্যরা চলে গেছেন। স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজে ছুটে যান গ্রামে। ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেছে। স্ত্রী ও ছোট ছেলের পুড়ে যাওয়া দেহ দাফন করার আগেই আবার ছুটে পালাতে হয় তাঁকে।

ইসমাঈল বলেন, ছেলের চিকিৎসা কীভাবে করাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। সবাইকে হারিয়ে কীভাবে বাঁচবেন, তা-ও জানেন না। তিনি বলেন, তাঁদের গ্রামে আগুনে পোড়া ও গুলিবিদ্ধ ৭০ জন রয়েছে। হেঁটে পালিয়ে আসার মতো অবস্থা নেই তাদের। চিকিৎসার অভাবে এক শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত লোকজন শিশু, বৃদ্ধ, নারী। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *