রোহিঙ্গা বিতাড়নের পরিকল্পনায় ভারতের সমালোচনায় জাতিসংঘ

Slider সারাবিশ্ব

 

82620_UN-1

 

 

 

 

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আবারো ভারতের কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ (এইএনআরসি)। ভারতে অবস্থানরত প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত সরকার। এ নিয়ে নয়া দিল্লি যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তার সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জায়েদ রাদ আল হোসেন। তিনি সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৩৬তম সেশনের উদ্বোধন করেন। নয়া দিল্লির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা এমন এক সময়ে এ পদক্ষেপ নিচ্ছে যখন রোহিঙ্গারা ভয়াবহ এক সহিংসতার মুখে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। ‘ইউএন রাইটস বডি স্লামস ইন্ডিয়া ফর সিকিং ডিপোর্টেশন অব রোহিঙ্গাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়। এতে আরো বলা হয়, ভারত সরকার ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে বের করে দেয়ার, গরু বিষয়ক নজরদারি ও সম্প্রতি সুপরিচিত সাংবাদিক গৌরি ল্যাঙ্কেশ হত্যার বিষয়ে ভারতের কড়া সমালোচনা করে জাতিসংঘের এ পরিষদ। এর আগে এ বছরের শুরুর দিকে সাম্প্রদায়িকতা বৃদ্ধি, গোষ্ঠীগত সহিংসতা, আফ্রিকানদের ওপর হামলা ও সমকামী বিয়েকে অপরাধ হিসেবে দেখার কারণে ভারতের সমালোচনা করেছিল জাতিসংঘ। এবার সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের বের করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যকে এ জন্য টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এমন নির্দেশ মানবেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়Ñ এটা তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের বের করে দেয়ার বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন দু’জন রোহিঙ্গা। তার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ফলে এ ইস্যুতে সব শক্তি এখন সরকারের হাতে। দৃশ্যত সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবেই। কোনো কোনো মন্ত্রী এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। ওদিকে সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় তিনি বিরোধে ভরা রাখাইন রাজ্যে উন্নয়নমুলক প্রকল্পে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই রাখাইনই হলো রোহিঙ্গাদের আবাসস্থান। নয়া দিল্লি মনে করে রোহিঙ্গা সঙ্কটে জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরণের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। ওদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জায়েদ রাদ আল হোসেন ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর দেয়া বিবৃতির কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগ করতে পারে। ভারত কোনো জনগোষ্ঠীকে একযোগে এমন স্থানে বের করে দিতে পারে না অথবা ফিরিয়ে দিতে পারে না, যারা নির্যাতন ও অন্যান্য মারাত্মক আইন লঙ্ঘনের শিকার হতে পারেন। প্রচলিত রীতিতে এটাই বলে। কারণ, ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটসকে অনুমোদনকারী দেশ ভারত। এক্ষেত্রে তারা এর নীতি ও কার্যবিধিগুলো মানতে বাধ্য। জায়েদ রাদ আল হোসেন ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি ও অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে একই বিষয় বৃদ্ধির জন্য হতাশা প্রকাশ করেন। গরু রক্ষার নামে সম্প্রতি যেসব দাঙ্গা হয়েছে তার নিন্দা জানান তিনি। বলেন, এসব দাঙ্গা এলার্মিং। তিনি এ সময় সম্প্রতি নিহত সাংবাদিক গৌরি ল্যাঙ্কেশের প্রসঙ্গেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *