আসন্ন কোরবানী ঈদ তথা ঈদুল আজহাকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে সিলেটের কামার পাড়া। নিঘুম রাত কাটাচ্ছে কর্মকাররা। বেড়েছে লোহায় হাতুড়ি পিটার আওয়াজ। টুমটাম শব্দ আর লোহা লক্করের ঝঁনঝনানী মাতিয়ে তোলেছে কামার পট্টিগুলো। চাপাতি, ছুরি, চাকু, দাঁ, বটি, কুড়াল ও কোদাল তৈরীতে ব্যাস্ত কর্মকাররা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর মহাজনপট্টি কালিঘাট, তোপখানা, কাজিরবাজার, আম্বরখানা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। ব্যস্ততা বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন তোপখানা এলাকার ২০ দোকানী। অনেকেই আবার আশা করছেন শেষ মুহূর্তে কোরবানি ঈদের আনুষাঙ্গিক দা, ছুরি, চাপাতি বটি বাজার জমে উঠবে।
সিলেটের কামার পাড়া তথা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পুরনো ছুরি ধার দিতে ৪০ থেকে ১২৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। নতুন বড় ছুরির দাম পড়ছে খরচ ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা, আর চাপাতি পাওয়া যাচ্ছে ৫৫০-৭০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া ছোট ছুরি ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। আর বটি আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তোপখানা এলাকার ব্যবসায়ী রাজেস কর্মকার জানান,“সারাবছর তেমন কাজ-কর্ম না থাকলেও কোরবানির ঈদ আসলেই জেগে উঠে কামারপাড়া। দা-ছুরির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কামারদের কাজ করতে হয় দিন-রাত।”
তবে এবার বাজারে ক্রেতার দেখা মিলছে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর এমন সময়ে বেচা-কেনা বেশ ভাল হলেও এবার হতাশ বিক্রেতারা।
কাজিরবাজার এলাকার বেনু দাস জানান, “সারা বছর মাংস কাটার দা, বটি, ছুরি, চাপাতি প্রভৃতি বিক্রি করে যে ব্যবসা হয় তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি ব্যবসা হয় কোরবানির ঈদে। কিন্তু এবার বাজারে ক্রেতা কম। তাই ব্যবসা মন্দা।”
কালিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সুমিত দে জানান, কাঁচা লোহা, ইস্পাত ও কয়লার মূল্যবৃদ্ধির কারণে এমনিতেই ধুঁকছে কামারশিল্প। অনেকে পেশা বদল করছেন।
“ঈদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে অনেক জিনিসপত্র তৈরি করা হলেও বাজারে ক্রেতা নেই। তাই লোকসানের মুখে পড়তে হবে।”
.
বার্তা প্রেরক
হাফিজুল ইসলাম লস্কর