প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতপার্থক্য এক পাশে রেখে এতদাঞ্চলের জনগণের প্রকৃত সমৃদ্ধি আনতে সর্বশক্তি নিয়ে কাজ করার জন্য সার্ক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সার্ক প্রকৃতপক্ষেই সার্বিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও উচ্চাশা অর্জন করতে পারে। এজন্য আমাদের মতপার্থক্য এক পাশে রেখে এতদাঞ্চলের জনগণের প্রকৃত সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি আনয়নে সর্বশক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ কাঠমান্ডু সিটি হলে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণে এ আহ্বান জানান।
আরো বাস্তবসম্মত, ফলাফলমুখী এবং সম্মিলিত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে পারস্পরিক কল্যাণমূলক অংশীদারিত্বের পদক্ষেপ গ্রহণে সার্ক নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, আরো শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া গঠনে অবদান রাখার অঙ্গীকার করি।’
তিনি বলেন, দ্রুত উন্নয়নে সার্ক দেশগুলোকে তাদের সার্বিক প্রচেষ্টা, উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রয়োগ সর্বপর্যায়ে জোরদার করতে হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য ও জলবায়ূ পরিবর্তন প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা আরো গভীরতর করার আহবান জানিয়ে বলেন, সার্কের কর্মকা-ে গতিশীলতা আনয়নে আমাদের মধ্যে আরো খোলামেলা আলোচনা হওয়া দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য সার্ক অঞ্চলের অভিন্ন ও প্রধান শত্রু। এটি এ অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা বিধানের আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, গত কয়েক দশকে উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়া ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। তা দারিদ্র্য বিমোচন এবং এমডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশে গত ৫ বছর গড় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ শতাংশ বজায় রয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জনগণের নিরাপদ সুপেয় পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশনের শাশ্বত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। তবে যেহেতু আমরা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে চাই সেহেতু আমাদের আরো অনেক কিছু করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জনগণের পুষ্টির নিরাপত্তা অর্জন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধান খাদ্যশস্য, অভ্যন্তরীণ মৎস্য ও পশুসম্পদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং কৃষি খাতে পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সার্ক ফ্রেম ওয়ার্কের আওতায় ফুড ব্যাংক ও সিড ব্যাংক পরিচালনা খুবই জরুরি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্ক অঞ্চলে রয়েছে বিপুলসংখ্যক তরুণ জনসংখ্যা। মানসম্পন্ন শিক্ষা ও কার্যকর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের প্রাথমিকভাবে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে শিক্ষার উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দরিদ্র পরিবারগুলোর ১২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ছাত্র-ছাত্রী মাসিক স্টাইপেন্ড পাচ্ছে। এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই মেয়ে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে বিনামূল্যে ৩১৮ মিলিয়ন পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমরা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।
নারী ও পুরুষ সবার কাছে মানসম্পন্ন কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্য হতে হবে কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, পুরুষের সঙ্গে জীবনের সর্বস্তরে তাদের সমান অংশগ্রহণ টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি বলেন, এ সাফল্যের পেছনে আমাদের সরকারের বাস্তবমুখী নীতি, সম্পদ বরাদ্দ ও জোরালো অঙ্গীকার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি বিশেষ করে আইসিটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে বহুমুখী করেছে। এটি আমাদের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। জীবনযাপনে বহু সমস্যার সমাধান করেছেÑ যা কয়েক বছর আগেও আমরা ভাবতে পারিনি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশব্যাপী ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব সেন্টার থেকে গ্রামীণ জনগণ প্রায় ২শ’ ধরনের আইসিটি সম্পর্কিত সেবা পাচ্ছে। তারা আইটি সংযুক্ত ১৩ হাজার ৫শ’ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ওষুধসহ স্বাস্থ্য সেবাও পাচ্ছে।
জলবায়ূ পরিবর্তনকে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশের বার্ষিক ডিজিপি ৩ শতাংশ হ্রাস পাচ্ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ প্রায় ৩ কোটি লোক বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি কার্যকর ও ব্যাপকভাবে মোকাবেলায় তাঁর সরকার একটি জাতীয় জলবায়ূ পরিবর্তন কৌশল ও একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অভিযোজন ও প্রশমনে তাঁর সরকার এ পর্যন্ত নিজস্ব সম্পদ থেকে ৩৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। সার্ক পর্যায়ে জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক চুক্তি ও পরিকল্পনার নিরাপদ ও ফলাফলমুখী বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
জ্বালানি খাতে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে এ খাতের উন্নয়নে আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ গ্রহণের।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জনগণের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানির সর্বোচ্চ সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে তিনি জ্বালানি সহযোগিতা সংক্রান্ত সার্ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের অগ্রগতিকে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন।
আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রসঙ্গে বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক শান্তি, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে যোগাযোগ বিস্তারে আগ্রহী। আমরা চিন্তা-ভাবনা, জ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, জনগণ, সড়ক-রেল-বিমান, পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ ও চলাচলে যোগাযোগ বিস্তারে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, সার্ক দেশগুলোর আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যের ওপর আলোকপাত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া সাপটা’র দ্রুত ও কার্যকর বাস্তবায়নও জরুরি।
শেখ হাসিনা সার্ক ফোরামের পর্যবেক্ষকদের অবদানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিগত বছরগুলোতে তারা জ্ঞানভিত্তিক সমর্থন দিয়েছে। বাংলাদেশ তাদের অবদানকে মূল্য দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সার্ক ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় প্রতিষ্ঠিত সেন্টারগুলোতে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, এসব কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক পণ্য, জ্ঞান ও ধারণার বাহক। এগুলোর উন্নয়নে আমাদের অবশ্যই সম্ভাব্য সব ধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিতে হবে।
তিনি বলেন, সার্ক প্রকৃতপক্ষেই সার্বিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও উচ্চাশা অর্জন করতে পারে। এজন্য আমাদের মতপার্থক্য এক পাশে রেখে এতদাঞ্চলের জনগণের প্রকৃত সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি আনয়নে সর্বশক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ কাঠমান্ডু সিটি হলে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণে এ আহ্বান জানান।
আরো বাস্তবসম্মত, ফলাফলমুখী এবং সম্মিলিত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে পারস্পরিক কল্যাণমূলক অংশীদারিত্বের পদক্ষেপ গ্রহণে সার্ক নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, আরো শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া গঠনে অবদান রাখার অঙ্গীকার করি।’
তিনি বলেন, দ্রুত উন্নয়নে সার্ক দেশগুলোকে তাদের সার্বিক প্রচেষ্টা, উন্নয়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রয়োগ সর্বপর্যায়ে জোরদার করতে হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য ও জলবায়ূ পরিবর্তন প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা আরো গভীরতর করার আহবান জানিয়ে বলেন, সার্কের কর্মকা-ে গতিশীলতা আনয়নে আমাদের মধ্যে আরো খোলামেলা আলোচনা হওয়া দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য সার্ক অঞ্চলের অভিন্ন ও প্রধান শত্রু। এটি এ অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা বিধানের আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, গত কয়েক দশকে উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে দক্ষিণ এশিয়া ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। তা দারিদ্র্য বিমোচন এবং এমডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশে গত ৫ বছর গড় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ শতাংশ বজায় রয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জনগণের নিরাপদ সুপেয় পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশনের শাশ্বত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। তবে যেহেতু আমরা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে চাই সেহেতু আমাদের আরো অনেক কিছু করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জনগণের পুষ্টির নিরাপত্তা অর্জন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধান খাদ্যশস্য, অভ্যন্তরীণ মৎস্য ও পশুসম্পদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং কৃষি খাতে পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সার্ক ফ্রেম ওয়ার্কের আওতায় ফুড ব্যাংক ও সিড ব্যাংক পরিচালনা খুবই জরুরি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্ক অঞ্চলে রয়েছে বিপুলসংখ্যক তরুণ জনসংখ্যা। মানসম্পন্ন শিক্ষা ও কার্যকর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের প্রাথমিকভাবে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে শিক্ষার উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দরিদ্র পরিবারগুলোর ১২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ছাত্র-ছাত্রী মাসিক স্টাইপেন্ড পাচ্ছে। এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই মেয়ে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে বিনামূল্যে ৩১৮ মিলিয়ন পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমরা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।
নারী ও পুরুষ সবার কাছে মানসম্পন্ন কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্য হতে হবে কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, পুরুষের সঙ্গে জীবনের সর্বস্তরে তাদের সমান অংশগ্রহণ টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি বলেন, এ সাফল্যের পেছনে আমাদের সরকারের বাস্তবমুখী নীতি, সম্পদ বরাদ্দ ও জোরালো অঙ্গীকার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি বিশেষ করে আইসিটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে বহুমুখী করেছে। এটি আমাদের জীবনে পরিবর্তন এনেছে। জীবনযাপনে বহু সমস্যার সমাধান করেছেÑ যা কয়েক বছর আগেও আমরা ভাবতে পারিনি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশব্যাপী ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব সেন্টার থেকে গ্রামীণ জনগণ প্রায় ২শ’ ধরনের আইসিটি সম্পর্কিত সেবা পাচ্ছে। তারা আইটি সংযুক্ত ১৩ হাজার ৫শ’ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ওষুধসহ স্বাস্থ্য সেবাও পাচ্ছে।
জলবায়ূ পরিবর্তনকে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশের বার্ষিক ডিজিপি ৩ শতাংশ হ্রাস পাচ্ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ প্রায় ৩ কোটি লোক বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি কার্যকর ও ব্যাপকভাবে মোকাবেলায় তাঁর সরকার একটি জাতীয় জলবায়ূ পরিবর্তন কৌশল ও একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অভিযোজন ও প্রশমনে তাঁর সরকার এ পর্যন্ত নিজস্ব সম্পদ থেকে ৩৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। সার্ক পর্যায়ে জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তঃসীমান্ত উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক চুক্তি ও পরিকল্পনার নিরাপদ ও ফলাফলমুখী বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
জ্বালানি খাতে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে এ খাতের উন্নয়নে আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ গ্রহণের।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জনগণের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানির সর্বোচ্চ সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে তিনি জ্বালানি সহযোগিতা সংক্রান্ত সার্ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের অগ্রগতিকে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন।
আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রসঙ্গে বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক শান্তি, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে যোগাযোগ বিস্তারে আগ্রহী। আমরা চিন্তা-ভাবনা, জ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, জনগণ, সড়ক-রেল-বিমান, পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ ও চলাচলে যোগাযোগ বিস্তারে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, সার্ক দেশগুলোর আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যের ওপর আলোকপাত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া সাপটা’র দ্রুত ও কার্যকর বাস্তবায়নও জরুরি।
শেখ হাসিনা সার্ক ফোরামের পর্যবেক্ষকদের অবদানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিগত বছরগুলোতে তারা জ্ঞানভিত্তিক সমর্থন দিয়েছে। বাংলাদেশ তাদের অবদানকে মূল্য দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সার্ক ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় প্রতিষ্ঠিত সেন্টারগুলোতে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, এসব কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক পণ্য, জ্ঞান ও ধারণার বাহক। এগুলোর উন্নয়নে আমাদের অবশ্যই সম্ভাব্য সব ধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিতে হবে।