পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর হাটগুলোতে কোরবানির পশুর ব্যাপক আমদানি হলেও বেচা-কেনা খুবই কম। হাটগুলোতে দেশি ও ভারতীয় গরু মিলে পর্যাপ্ত পশুর সমাহার ঘটেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন গরুর হাট ঘুুরে দেখা গেছে, এবার হাটে প্রচুর গরু এসেছে। পাবনা থেকে তিনটি ট্রাকে করে গরু নিয়ে গাবতলী গরুর হাটে এসেছেন রান্নু, শাহিনুর। কয়েকদিন আগে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন তারা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪০টি গরুর অর্ধেকও বিক্রি করতে পারেননি তারা।
কামরাঙ্গীরচর পশু হাটের আলীনগর খালপাড় প্রধান সড়কের দুই পাশেই সারি করে ছোট, মাঝারি থেকে বড় গরু বাঁধা রয়েছে। তবে এখানেও খুব একটা বিক্রি হচ্ছে না গরুগুলো।
এছাড়া শনির আখড়া ও কমলাপুর হাটেও গরুবোঝাই ট্রাক শুধু আসছেই। কিন্তু সে অনুযায়ী ক্রেতার আনাগোনা নেই।
বেপারিরাও উপযুক্ত ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন। ছোট আকৃতির দেশি ষাঁড় গরু দাম চাইছেন ৪০-৭০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরু ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা এবং বড় আকারের গরুর দাম ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত চাইতে দেখা গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম গতবারের তুলনায় একটু বেশি। তবে বেপারিরা বলছেন উল্টো কথা। তাদের দাবি, গরু লালন-পালন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে ক্রেতারা সে দামও বলছেন না।
রান্নু নামে এক গরু ব্যবসায়ী বলেন, এখনও গরু বিক্রির মুখ দেখতে পারি নাই। কী হবে বুঝতেছি না। তিনদিন ধরে আছি। মানুষজন এসে গরুর দাম শুনে চলে যায়। হয়তো সামনের দিনগুলোতে বেচা বিক্রি হবে।
কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী হাবিজুর বলেন, শনিবার রাতে ঢাকায় এসেছি। গরু নিয়ে আসছি তিনটা। আমার সঙ্গে আমার এলাকার অনেকেই এসেছেন। তবে এখনও সব গরু বিক্রি হয়নি।
ক্রেতারা দাম কেমন বলছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে কুষ্টিয়ার আরেক গরু ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বলেন, সবার কথা জানি না। আমার একটা গরুর দাম চাইছি সাড়ে ৩ লাখ। কিন্তু যারা গরু দেখতে আসছে তারা দেড় লাখ দাম উঠাইছে।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন হাটে ভারতীয় গরু উঠতে শুরু করেছে। গাবতলী পশুর হাটে প্রচুর ভারতীয় গরু উঠেছে। এর বাইরে বছিলা, হাজারীবাগ, রহমতগঞ্জ, কমলাপুর, উত্তরা হাটেও অনেক ভারতীয় গরু উঠিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এখনও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ট্রাকভর্তি ভারতীয় গরু দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। কিন্তু ক্রেতার অভাব ও প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় অনেকেই গরু বিক্রি করতে পারছেন না। তবে বিক্রেতাদের আশা, বুধবার থেকে জমে উঠতে পারে কোরবানির হাট। যা চলবে ঈদের আগের দিন শুক্রবার পর্যন্ত।
রাজধানীর কোরবানির হাটে বেচাকেনা কম হলেও চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে পশু বিক্রি জমে উঠেছে। অনেক বাজারে চলছে রাতদিন সমানতালে বিকিকিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নগরে বর্তমানে স্থায়ী দুটি এবং অস্থায়ী ছয়টি পশুর হাট আছে।