মঙ্গলবার ভোররাত ও দুপুরে টেকনাফের নাজির পাড়া ও পৌর এলাকায় বিকাশের দোকানে অভিযান চালিয়ে সব মিলিয়ে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডি।গ্রেফতাররা হল, টেকনাফ সদরের নাজির পাড়া এলাকার এজাহার মিয়ার ছেলে ইয়াবা সম্রাট নূরুল হক ভূট্টো, ভাই নূরুল আলম, ভাগিনা একই এলাকার নূরুল আলমের ছেলে বেলাল উদ্দীন ও জলাল উদ্দীন, আরেক ইয়াবা গডফাদার নূরুল আলম ডি মারিয়া, তার সহযোগী আরিফ, বিকাশ এজেন্ট মোঃ তৈয়ুব, আব্দুর রহমান, নূরুল মোস্তফা ও রাশেল। এসময় বিকাশের এজেন্টদের কাছ থেকে অবৈধ উর্পাজিত ২০ লাখ নগদ টাকা, ব্যবহারিত শতাধিক সীম ও ২০টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা পুলিশের সিআইডির এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেলের কার্যালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তী সূত্রে জানায়, সিআইডির অর্গনাইজ ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম বার) এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিক ও এএসপি নিজাম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম ও এএসপি ইকবালের সমন্বয়ে গঠিত দুইটি দল র্দীঘদিন অনুসন্ধান চালিয়ে গোপন সংবাদে গত সোমবার চট্রগ্রামের চন্দনাইশ এলাকা থেকে নুরুল হক ভুট্টোসহ তার কয়েক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল সীম ও তার ইয়াবা সিন্ডিকেটের পাচারকারীর একটি তালিকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার ভুট্টোর বিরুদ্ধে অধিকাংশই ইয়াবা পাচারসহ আটটির বেশি মামলা রয়েছে। এছাড়া সাংবাদিকের উপর হামলা মামলাও রয়েছে।
এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকসহ অন্যান্য আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানায়। বাংলাদেশে শীর্ষ ১০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে ভুট্টো একজন। সারা দেশেই বিস্তৃত তার ইয়াবা ব্যবসার নেটওয়ার্ক। সারাদেশে তার সিন্ডিকেটের সদস্য রয়েছে। ইয়াবা পাচার করে আয় করা বিপুল টাকা বিদেশেও পাচার করেছে ভুট্টো এমনটি জানিয়েছেন।
সিআইডি সূত্রে বলা হয়, এতদিন ধরে পুলিশ মাদক উদ্ধার ও তদন্ত করে আসছিল। কিন্তু মূল অপরাধি পর্যন্ত পৌছানো সম্ভব হয়নি। যার ফলে মাদকদ্রব্য বিস্তার রোধ করা যাচেছনা। মাদকদ্রব্য অপরাধ তদন্তে আর্ন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি হচেছ টাকার উৎস খুজ। এ পদ্ধতি অনুসরন করলে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত সব পাওয়া যাবে। সম্প্রতি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের তদন্তের ক্ষমতা সিআইডকে অর্পন করায় এ ধরনের মামলা তদন্তে একটি নতুন দ্বার উম্মোচিত হয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন ব্যাংকের একাধিক একাউন্ট ও বিকাশ একাউন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় মাদক ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এতে ইয়াবা গডফাদার নূরুল আলম ডি মারিয়া ও আগে গ্রেফতার ভাই ফরিদ আলমের একাউন্ট থেকে ১১ কোটি টাকা, নূরুল হক ভূট্টোর একাউন্ট থেকে ৯৬ লাখ টাকা, নূর মোহাম্মদের একাউন্ট থেকে ৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গত দুই বছর আগে এরা কেউ রিক্সা চালক, কেউ জেলে বা লবন চাষী ছিল। বর্তমানে মাদক ব্যবসায় কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। কুঁড়ে ঘর হয়েছে অট্রালিকা। শুধু তাই নয় মাদক ব্যবসা হতে অবৈধ ভাবে লাভবান হয়ে নামে-বেনামে বহু ব্যবসা প্রতিষ্টান, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক বনে যায়।