মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মি বা অন্য ইসলামিক মিলিটেন্টদের ধরতে (ইসলামের নামে যারা সশস্ত্র) দুই দেশের জয়েন্ট অপারেশনের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে ‘বাঙালি’ শব্দের ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছে ঢাকা। গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত অং মিন্টকে ফের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। বাংলাদেশের তরফে স্পষ্ট করেই বলা হয়, গত সপ্তাহে রাখাইনে মিয়ানমার পুলিশের ওপর যে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে তা একান্তই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর সঙ্গে ‘বাঙালি’ শব্দের ব্যবহার নিন্দনীয়, এটি অগ্রহণযোগ্য। রাষ্ট্রদূতকে আরো বলা হয়, যদি তারা মনে করেন, সীমান্তে সন্ত্রাসী বা ইসলামিক মিলিটেন্ট রয়েছে তাদের ধরতে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। বাংলাদেশের মাটি কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার যে নীতি সরকারের রয়েছে তা-ও মিয়ানমারকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এক বছর আগে জয়েন্ট পেট্রোলিং এবং গত ডিসেম্বরে জয়েন্ট ইন্সপেকশনের প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার জয়েন্ট অপারেশনের প্রস্তাব দিলো ঢাকা। মিয়ারমারের রাখাইনে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা আগেই জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত শনিবার রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিল। সেই সময়ে ঘটনা পরবর্তী সহিংসতায় দেশটির হাজার হাজার নিরস্ত্র নাগরিকের বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। রাষ্ট্রদূতকে তলবের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। এতে বলা হয়, গত ২৫শে আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ওপর হামলার প্রেক্ষিতে সেখানে নতুন করে যে সহিংসতা শুরু হয়েছে তা আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার ফের্সের ওপর এমন হামলার নিন্দা জানায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন রাখাইনের রাথিডং-বুথিডং এলাকায় মিয়ানমারের নতুন করে সেনা মোতায়েনের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট সহিংসতায় নিরীহ লোকজনের প্রাণহানির ঘটনায়। গত বছরের ৯ই অক্টোবর মিয়ানমার পুলিশের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে একই রকম সেনা অভিযান (মিলিটারি অপারেশন) হয়েছিল যাতে প্রায় ৮৫ হাজার মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকেছে উল্লেখ করে সেদিন সচিব মিয়ানমার দূতকে বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে রাখাইনের নারী, শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠসহ হাজার হাজার নিরস্ত্র নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টায় সীমান্তে জড়ো হয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। দেশটির সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া এবং বাংলাদেশে তাদের অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে সেটি নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়ে হয়েছিল গত শনিবার। গতকালও মিয়ানমার দূতকে সেই বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার দূত জয়েন্ট অপারেশনের প্রস্তাবের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। প্রস্তাবের বিষয়টি তার সরকারের বিচেনায় উপস্থাপন করবেন বলে অঙ্গীকার করে গেছেন।