ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। গতকাল ঈদযাত্রার প্রথম দিনে তীব্র যানজট ছিল ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। ফেরি পারাপারে বিলম্বের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও মাওয়া-জাজিরা ঘাটের দুই প্রান্তেও ছিল দীর্ঘ জট। অন্যদিকে মোটামুটি যানজটমুক্ত ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এর বাইরে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট ও তেজগাঁও স্টেশনের মাঝামাঝিতে রেললাইন ভেঙে যাওয়ায় বিলম্বিত হয় তিনটি ট্রেনের যাত্রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশুলিয়া থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট ছিল। দুপুরের পর তা খানিকটা কমে আসে। সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। নবীনগর থেকে চন্দ্রার ত্রিমোড় ও বাইপাইল অংশে যানজটের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। যানজটে শত শত গাড়ি আটকা পড়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। তবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের পর থেকে গাড়ি ধীরগতিতে চললেও কোথাও যানজট ছিল না। সড়কটি চার লেনে উন্নীতের কাজ চলায় যানবাহন কিছুটা ধীরগতিতে হলেও চলতে সমর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
একই অবস্থা ছিল ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। গতকাল সন্ধ্যায় মহাসড়কের টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর অংশে প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাজীপুরের কালীগঞ্জের উলুখোলা ব্রিজ থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার যানজট ছিল।
এই তিন মহাসড়কের যানজট সম্পর্কে গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশের এএসআই বদরুল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সকালের দিকে এসব মহাসড়কে কিছুটা যানজট থাকলেও বিকাল থেকেই কমতে শুরু করেছে। ঈদের কারণে সড়কে গাড়ির চাপ কিছুটা বেশি। ছোটখাটো দুর্ঘটনা ও বাড়তি গাড়ির চাপে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন স্থানে যানজট দেখা দিচ্ছে।’ যানজট কমাতে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। গত ২৬ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহাসড়কটি পরিদর্শনের পর থেকেই কয়েক দিন ধরে চলা যানজট কমতে শুরু করে। গতকাল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ধীরগতি থাকলেও কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। তবে মেঘনা ও গোমতী সেতুর টোলপ্লাজার সামনে কিছুটা যানজট হচ্ছে।
এদিকে ফেরী সংকটের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটের দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে গতকাল। দুই পাশে পশুবাহী ট্রাকসহ শত শত যানবাহনকে ফেরীর অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ থাকতে হচ্ছে।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে ঘাটে ফেরি সংকট তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি পদ্মা-যমুনার তীব্র স্রোতের কারণেও ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।