তালাক শব্দটি তিনবার উচ্চারণ করে স্ত্রীকে তাক্ষণিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ দেওয়ার রীতি মুসলিম সমাজে বহু প্রচলিত। এই তিন তালাক প্রথাকেই অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ছয়মাসের মধ্যে কেন্দ্রকে আইন করে এই প্রথা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। এর উলটোটাও কিন্তু সম্ভব।
ইসলামিক আদালতে স্বামীর কাছ থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করতে পারেন মুসলিম নারীরাও। এই প্রথা ‘খুলা’ নামে পরিচিত। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর এক ইসলামিক আদালতে তরফে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ওই আদালতে ৭০টি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের হয়েছে। স্বামীর থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে মামলা হয়েছে ৫৩টি।
বস্তুত, গত বছর ওই আদালতে ১১৬টি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হয়েছিল। যার মধ্যে স্বামীর থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে ৮১টি মামলা করেছিলেন মুসলিম নারীরাই। ওই ইসলামিক আদালতের প্রধান কাজি মৌলানা মহম্মদ হারুন রশিদি জানিয়েছেন, স্বামীর থেকে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে যেসব মুসলিম নারীরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন, তাদের বয়স ২৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। তবে তিন তালাকের মতো খুলার ক্ষেত্রে অবশ্য স্বামীকে খরপোস দিতে হয় না।
তিনি জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামীর দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ, বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক, পারিবারিক চাপের কারণে বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন মুসলিম মহিলারা। এমনকী, কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার জন্য কিংবা স্বামীর থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি হওয়ার কারণেও বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা।
তবে ইসলামিক আদালতে মুসলিম নারীরা বিবাহবিচ্ছেদে আবেদন করলেই যে সবসময় তা মঞ্জুর হয়ে যায়, এমনটা নয়। সাধারণ আদালতের মতো ইসলামি আদালতও প্রথমে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, তাতে যদি কোনও কাজ না হয়, তখন মুসলিম মহিলাদের বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দেওয়া হয়।