ঢালিউডে নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ (১৯৬৬)। ‘বেহুলা’য় লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
আর তার প্রথম নায়িকা সুচন্দা। বেহুলা ব্যবসা সফল হওয়ায় আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে।
১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর ঢাকায় ভারতীয় ছবি আসা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলা সিনেমার এখানকার দর্শক সেদিন উত্তম-সুচিত্রা জুটির পর রাজ্জাক-সুচন্দা জুটিকেই সাদরে নিয়েছিল। সামাজিক-পারিবারিক ছবি বা সে সময়ের লোককথার ছবিতে এ জুটি সমাদৃত হন।
ষাট দশকের সেই রোমান্টিক নায়িকা সুচন্দার সঙ্গে রাজ্জাকের দর্শকনন্দিত সিনেমাগুলো—আনোয়ারা (১৯৬৭), দুই ভাই (১৯৬৮), সুয়োরানী দুয়োরানী (১৯৬৮), কুচবরণ কন্যা (১৯৬৮), মনের মত বউ (১৯৬৯), সখিনা (১৯৬৯), জুলেখা (১৯৬৮), যোগ বিয়োগ (১৯৭০), জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০), যে আগুনে পুড়ি (১৯৭০), সংসার (১৯৬৮), প্রতিশোধ (১৯৭২), জীবন সংগীত (১৯৭২) এবং অশ্রু দিয়ে লেখা (১৯৭২)।
সুদর্শন রাজ্জাক সুচন্দার পর শবনম, কবরী, ববিতা, শাবানাসহ তখনকার প্রায় সব অভিনেত্রীকে নিয়ে একের পর এক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র দেন ঢালিউডকে।
সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আবির্ভাব’চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা সিনেমায় আবির্ভাব ঘটে রাজ্জাক-কবরী জুটির। একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেছেন তারা। ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘ঢেউ এর পরে ঢেউ’এবং স্বাধীনতার পর ‘রংবাজ, ‘বেঈমান’সহ বিভিন্ন সফল ছবি উপহার দেন এই জুটি।
রাজ্জাক সবচেয়ে বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন শাবানার বিপরীতে। ১৯৭০ সালে ‘মধুমিলন’ ছবি দিয়ে রূপালি পর্দায় জুটি বাঁধেন তাঁরা। তারপর ‘অবুঝ মন’, ‘সাধু শয়তান’, ‘মাটির ঘর’, ‘দুই পয়সার আলতা’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তাঁরা।
রাজ্জাক-ববিতা জুটিকে নিঃসন্দেহেই বলা চলে ঢাকাই ছবির অন্যতম সেরা রোমান্টিক জুটি। এই জুটির সবচেয়ে আলোচিত ও সমাদৃত সিনেমা ‘অনন্ত প্রেম। এ সিনমায় চিত্রায়িত হয়েছিল বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের প্রথম চুম্বন দৃশ্য।
রাজ্জাক-ববিতা অভিনীত ‘অনন্ত প্রেম’ মুক্তি পায় ১৯৭৭ সালে। সেই সময়ের তুলনায় ছবিটি ছিল দারুণ সাহসী। ছবির শেষ দৃশ্যে নায়ক নায়িকার গভীর চুম্বনের দৃশ্য ছিল যা সেই সময়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল।