গড়াই নদের তীব্র স্রোতে কুষ্টিয়া শহররক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন আগে কুষ্টিয়া শহরসংলগ্ন শ্মশানঘাট এলাকায় দুটি স্থানে বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত এই ধসে আশঙ্কার কিছু না থাকলেও নদে আরও পানি বাড়লে হুমকির মুখে পড়তে পারে কুষ্টিয়া শহর।
পাউবো সূত্র জানায়, কুষ্টিয়ার হরিপুর এলাকা থেকে পদ্মার শাখা বের হয়ে হয়েছে গড়াই নদ। পদ্মায় পানি বেড়ে যাওয়ায় এই গড়াই নদের পানি বাড়তে থাকে। কুষ্টিয়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদের মহাশ্মশানঘাট এলাকায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। এতে শহররক্ষা বাঁধের দুটি স্থানে হঠাৎ করে ধস নামে। এর এক জায়গায় ২০ মিটার, পাশে একটু দূরে আরও ৩০ মিটার অংশজুড়ে বাঁধের ব্লক ধসে নদে পড়ে। গত শনিবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক জহির রায়হানসহ পাউবোর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।
কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম জানান, গড়াই নদ থেকে কুষ্টিয়া শহরকে রক্ষা করতে ২০১১ সালে শ্মশানঘাট এলাকায় প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ হাজার ৬০০ মিটার ব্লক বাঁধ তৈরি করা হয়। এবার গড়াইয়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েক দিন আগে সেখানকার দুটি পৃথক স্থানে ২০ ও ৩০ মিটার করে ৫০ মিটার ধসে গেছে। নদে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি স্রোত বেড়ে যাওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। আপাতত এতে আশঙ্কার কিছু না থাকলেও নদে যদি আরও পানি বৃদ্ধি পায়, তবে কুষ্টিয়া শহর হুমকির মুখে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘তবে শহরের পাশে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রোয়েন বাঁধও হুমকির মুখে আছে। সেখানে পানির স্রোত বেশি হওয়ায় বাঁধটি ঝুঁকিতে আছে। এটা নিয়ে আতঙ্কে আছি।’
পাউবো থেকে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আপাতত শ্মশানঘাট এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। মঙ্গলবাড়িয়া বাঁধেও জিও ব্যাগ ফেলার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গতকাল রোববার দুপুরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে পদ্মায় পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৮২ মিটার। বিপৎসীমা থেকে নদীর পানি প্রায় ৪৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গড়াই নদে পানি স্থিতি অবস্থায় আছে বলে পাউবো জানায়। এদিকে কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় পদ্মা তীরবর্তী প্রায় ২০০ বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া শহরে গড়াই নদের চরে বেশ কিছু বাড়িও জলমগ্ন হয়েছে।