বন্যায় দিনাজপুর সদর উপজেলার কাউগাঁও এলাকায় রেল লাইন ছাড়াও আরও কয়েকটি স্থানে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এখনও দিনাজপুরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে, বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর সড়ক-মহাসড়ক ও রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এতে অনেক সড়কেই যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের সদর উপজেলার পাচবাড়ী এলাকায় কিছু স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে মহাসড়ক ভেঙ্গে গেছে। ফলে ওই মহাসড়কে এখনও পুরোপুরি যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। তবে যান চলাচলের উপযোগী করতে কাজ করছে সড়ক বিভাগ।
দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। পাশাপাশি দিনাজপুর শহরের কিছু অংশ এখনও পানির নীচে ডুবে আছে। তবে সকল নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে প্লাবিত বিভিন্ন এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও বেড়েছে খাদ্য সংকট ও রোগ-বালাই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর সদর উপজেলার শশরা ইউনিয়নের রাজাপুকুর শাহপাড়ার বাসিন্দারা জানান, বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও আমাদের মাটির বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে গেছে। তাদের অভিযোগ, বিভিন্নভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়, বন্যাকবলিত মানুষের তুলনায় কম। কেউ পাচ্ছেন তো কেউ পাচ্ছেন না।
দিনাজপুর সদর উপজেলা ইউএনও আব্দুর রহমান জানান, শুধু সদরের আঞ্চলিক ২৬ সড়কের ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়েছি। তবে এটা আরও বাড়তে পারে।
পার্বতীপুর রেলস্টেশন মাস্টার শোভন রায় জানান, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ রেললাইন সংস্কার ও মেরামত কাজ শেষে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে। তবে কবে নাগাদ শুরু হবে বলতে পারেননি তিনি। স্টেশন মাস্টার আরো জানান, আন্তঃনগর একতা ও দ্রুতযান ট্রেন দুটি ঢাকা-দিনাজপুরের পরিবর্তে পার্বতীপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচল করছে।
এদিকে, বন্যার্তদের মাঝে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে ১১ লাখ টাকা, ২৭৫ মেট্রিক টন চাল ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার (চিড়া, গুড়, মুড়ি ও বিস্কুট) বিতরণ করেছে। আরও ৫০ লাখ টাকা ও ৩০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
প্রশাসনের ১২৫টি স্বাস্থ্য ক্যাম্পের পাশাপাশি চিকিৎসা দিচ্ছেন সেনা ও বিজিবির সদস্যরাও। এখনও পানিবন্দি জেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষ, ৩৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন বন্যার্তরা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান জানান, প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বন্যাকবলিতদের অবস্থান যেখানে, সেখানেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী। বন্যা পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জেলার সকল দুর্গত মানুষকে সহযোগিতা করা হবে। বন্যাপরবর্তী সময় করা হবে পুনর্বাসনও।