এম এ কাহার বকুল;
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলী ও তার দুই ছেলের হুমকিতে ১৫ দিন যাবত বিদ্যালয়ে আসছেন না সারপুকুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আবু তালেব বাদশা মিয়া জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে বুধবার রাতে সংশ্লিষ্ট আদিতমারী থানায় একটি সাধারন ডায়রী করেছেন। যার জিডি নং-৩৭২,তারিখ ০৯/০৮/২০১৭। যে কোন সময় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি।
অভিযুক্ত তিনজন হলেন, উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ্যদানকারী মনসুর আলী (৬৫) ওতার দুই ছেলে স্বপন মিয়া (২৬) ও রিপন মিয়া (৩০)।
থানা পুলিশ ও জিডি সুত্রে জানাগেছে, গত ১০ জুলাই সারপুকুর উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বিধি মোতাবেক এ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। এ্যাডহক কমিটিতে সারপুকুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলী সভাপতি হিসেবে কমিটিতে আসতে না পারায় প্রধান শিক্ষকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ ঘটনার জের ধরে গত ১৬ জুলাই তিনি ও তার দুই ছেলেসহ অজ্ঞাত আরও ৮/১০ জন লোকসহ বিদ্যালয় চলাকালীন অবস্থায় অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য এ্যাডহক কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করেন তিনি ও তার লোকজন। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের মারপিট করার জন্য চড়াও হয়। এসময়য় বিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে বলেন, এ্যাডহক কমিটি ভেঙ্গে না দিলে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকদের রাস্তায় সুযোগমত মারপিট করা ছাড়াও জোর পূর্বক প্রধান শিক্ষকের ইস্তফা পত্রে স্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে। প্রভাবশালী এ চক্রটির অব্যাহত হুমকির কারণে গত ১৫ দিন যাবত বিদ্যালয়ে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আবু তালেব বাদশা মিয়া। আর ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থায় বিদ্যালয়টির শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও প্রধান শিক্ষকের উপর বেআইনী চাপ সৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য গত বুধবার ইউএনও আসাদুজ্জামান বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ প্রসংগে সারপুকুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলী শুক্রবার দুপুর ১২টায় সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত এ্যাডহক কমিটির মাধমে ৪ জন শিক্ষক ও একজন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ দিয়ে প্রধান শিক্ষক ৪৫ লক্ষ টাকা আৎসাতসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করেছেন। অনিয়ম থেকে নিজেকে রক্ষার জন্যই প্রধান শিক্ষক আমিসহ আমার ছেলেদের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন।
আদিতমারী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ এর দায়িত্বে থাকা ওসি তদন্ত মাহফুজার রহমান প্রধান শিক্ষকের জিডি দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
ইউএনও আসাদুজ্জামান ছাত্রদের পক্ষ থেকে এধরনের একটি অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের করা হবে।