বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় এক হাজার ঘরবাড়িসহ অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম: আজ শনিবার কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের পানিও বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কুড়িগ্রাম কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীতে ব্রিজ পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার ও তিস্তায় পানি ২৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, রাজারহাট, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুরের চরাঞ্চলের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে দ্বিতীয় দফা পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদরের যাত্রাপুর, আঠারঘড়িয়া, বারোঘড়িয়া, হেমেরকুঠি, জগমোহনের চর, চর জয়কুমরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ধরলার ভাঙনে বাংটুর ঘাট, হেমেরকুঠি, সারোডোব এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ: বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় শিশুদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে জেলার সাতটি উপজেলার ৮৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা দুই দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বায়েজিদ খান জানান, জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলছে। কিন্তু উজান থেকে নেমে আস ঢল ও প্রবল বর্ষণের কারণে অনেক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। আবার কোনো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পানি উঠে গেছে। এ ছাড়া হাওর এলাকার শিশুদের জন্য বিদ্যালয়ে আসা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ধরমপাশা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এবং দিরাই উপজেলার ৮৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আজ ও কাল রোববারের পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। তবে স্কুল খোলা থাকবে। শিক্ষকেরা স্কুলে যাবেন। এসব স্কুলের পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে নেওয়া হবে।