লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারের জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই : স্পিকার

টপ নিউজ
image_154893.abdul-latif-siddiquiদল ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করা হলেও টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এখনো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। তাকে বহিস্কারের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে এখনো স্পিকারকে অবহিত করা হয়নি। এমনকি তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে স্পিকারের অনুমতি দরকার বলে দাবি করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে স্পিকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। এদিকে কোন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তারের জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, স্পিকারের অনুমতি ব্যাতিরেকে সংসদ সীমার মধ্যে কাউকেও গ্রেপ্তার করা যাবে না। এখানে সংসদ সীমার ব্যাখায় বলা হয়েছে, সংসদের অধিবেশন কক্ষ, লবি, গ্যালারী বা স্পিকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থান। ফলে সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারে কোন বাধা নেই বলে দাবি করেছেন সংসদ সচিবালয়ের আইন কর্মকর্তারা। তারা জানান, এর আগে একাধিক সংসদ সদস্যকে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তারের রেকর্ডও রয়েছে। নবম সংসদে বিএনপির কয়েকজন সংসদ সদস্যকে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিরোধীদলীয় সদস্যরা বিষয়টি স্পিকারের দৃষ্টিতে আনলে তখন স্পিকার তাদেরকে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির উক্ত ধারা পড়ে শোনান।
এ বিষয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, সংসদের বাইরে থেকে সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারের জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অনুমতি লাগবে বলে জানালেও সেটা ঠিক নয়। তিনি বলেন, চলমান একটি আইনে সংসদ অধিবেশন চলাকালে এবং অধিবেশনের আগে ও পরের ১৪ দিনে সংসদ সদস্যদের গ্রেপ্তারে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে সেখানে স্পিকারের অনুমতির কোন বিষয় উল্লেখ নেই। ১৯৯৩ সালের এই আইনটি ১৯৮০ সালে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বিলুপ্ত করা হলেও সেই অধ্যাদেশের আলোকে পরবর্তী সংসদে আইন প্রণয়ন না হওয়ায় আগের আইনটিই এখন বহাল আছে।
পাকিস্তান আমলের ওই আইন আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়- এ দাবি করে স্পিকার বলেন, এই আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে
আইনমন্ত্রী উদ্যোগ নিবেন বলে আশা করি। আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি এখনো দলের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে কোন আলোচনাও হয়নি। ফলে এ ক্ষেত্রে আমার কিছু করণীয় নেই।
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.), হজ ও তাবলীগ নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় লতিফ সিদ্দিকীকে প্রথমে মন্ত্রিপরিষদ ও পরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে অপসারণ করা হয়। সর্বশেষ গত ২৪ অক্টোবর দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়। তবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত আওয়ামী লীগদলীয় এই সংসদ সদস্যকে দল থেকে বহিস্কারের বিষয়টি লিখিতভাবে স্পিকারকে জানানোর কথা থাকলেও তা এখনো জানানো হয়। আর একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তিনি গতকাল রবিবার রাতে দেশে ফিরলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য স্পিকারের অনুমতি লাগবে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *