পুরনো দ্বিতল ভবনের নিচতলার বারান্দার ছাদের অংশে ফাটল। বসে গেছে গ্রিলের একাংশ। দুর্ঘটনা এড়াতে যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১০টি বাঁশের খুঁটি দিয়ে সাময়িকভাবে ঠেকিয়ে রেখেছে ছাদ। যদিও রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। যেকোনো সময় ছাদ ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার ওবায়দুল ইসলাম কাজল জানান, এর আগেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু সে সময় গণপূর্ত বিভাগ ভবনটি সংস্কারের ব্যাপারে তেমন কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানানোর পর ভবনটি পরিদর্শন করা হয়েছে বলে জানান গণপূর্ত বিভাগ যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ফ্রান্সিস আশিষ ডি কস্টা। তিনি বলেন, দুর্ঘটনা বা ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আপাতত ছাদে বাঁশের খুঁটি লাগানো হয়েছে। অতিদ্রুত ভবন সংস্কার করা হবে। তবে এ মুহূর্তে ছাদ ধসে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
ধসে পড়ার আশঙ্কা নেই বলা হলেও আতঙ্ক কাটছে না হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের। হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা ওই ওয়ার্ডের রোগী মফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। ছাদ ভেঙে পড়লে রোগীসহ বহু মানুষের প্রাণহানি হতে পারে।
১৯৫৬ সালে ভবনটি নির্মিত হয়। এর নিচতলায় রয়েছে সার্জারি ও অর্থোপেডিক এবং দ্বিতীয় তলায় মেডিসিন ওয়ার্ড। নিচতলায় বেডের সংখ্যা ৩০ ও দ্বিতীয় তলায় ৭০। রোগীর স্বজন মিলে এখানে সবসময় প্রায় ১৫০ জন অবস্থান করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাধীনতার পর ভবনটি সংস্কার করা হয়নি, যে কারণে এ ফাটল দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম কামরুল ইসলাম বেনু বলেন, গত রোজার ঈদের দুদিন আগে হাসপাতালের নিচতলার ছাদে ফাটল দেখা দিলে প্রকৌশলীকে খবর দিই। তিনি হাসপাতালে এসে পুরো ভবন পরিদর্শন করেন। তাকে ঢাকায় জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি জানাতে বলি। শনিবার ফাটলের জায়গাটা ও দ্বিতীয় তলার গ্রিলের একাংশ বসে যাওয়ায় অবস্থা বেগতিক দেখে গণপূর্ত বিভাগকে অবহিত করেছি। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য তারা ১০টি বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঠেকনা দিয়েছে।
হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স শিরিন সুলতানা ও শাহানারা বেগম বলেন, শুক্রবারও ফাটলের স্থানে বাঁশের খুঁটি দেয়া ছিল না। শনিবার রাতে ডিউটিতে এসে ফাটলের স্থানে খুঁটি দেখি। ছাদ ভেঙে পড়ে কিনা, সে আতঙ্কের মধ্যে আছি।
উল্লেখ্য, যশোর অঞ্চলের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র যশোর আড়াইশ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। এখানে নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে প্রতিদিন হাজারো রোগী আসেন চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য।