অতিবৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের রহমতখালী নদীর ১৬ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে নদীকূল এলাকার ৫টি গ্রামে হাজারো পরিবার তাদের বসত ভিটা হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বর্তমানে রাস্তার পাশে বসবাসসহ অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। এছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে বহু ঘর-বাড়ি, হাট-বাজারসহ অন্যান্য স্থাপনা।
লক্ষ্মীপুরে অতিবৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে ভাঙছে রহমতখালী নদী। সদর উপজেলার মজু চৌধুরীর হাট স্ল্ইুজ গেইটের পূর্ব পাশ থেকে টুমচর কালির চর ও ভবানীগঞ্জসহ ৫টি গ্রামের ১৬ কিলোমিটার এলাকায় প্রতিনিয়ত নদীর দু’পাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙন ও চলমান বর্ষায় তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছেন নদীপাড়ের সহস্রাধিক পরিবার। ইতোমধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়েছে অনেকে। আর এসব পরিবারের অনেকে বসত ভিটা হারিয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিলেও অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এখন। ভাঙনের মুখে এখন নিজেদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়াসহ গাছ-পালা কেটে নিতে দেখা গেছে অনেককে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এতে করে স্থানীয় কালিরচর বাজার, জগৎ বেড়, চররমনী মোহন এলাকাসহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন হুমকির মুখে রয়েছে। নিম্ম আয়ের ভুক্তভোগী এসব বাসিন্দারা সরকারি সহায়তার দাবি জানান।
কেউ কেউ বলছেন মজু চৌধুরীর হাট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নদীর মাঝখানে পলি জমে চর জেগে উঠেছে। এতে করে পানি প্রবাহিত হতে না পেরে তীব্র স্রোতে নদীর দুই পাড় ভাঙছে। খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিজানান স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইয়ার আলী বলেন, রহমতখালী নদীর ১৬ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহত্তর নোয়াখালীর পানি এ নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। ৬০ এর দশকে এখানে একটি রেগুলেটর ও পরে আরেকটি রেগুলেটর স্থাপন করা হয়। কিন্তু বিপুল পরিমাণ পানি একই জায়গা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কাররণে তীব্র স্রোতে এ পাড় ওই পাড় ভাঙন শুরু হয়। এছাড়া নদীর মাঝখানে বিভিন্ন পয়েন্টে পলি জমে চর জেগে উঠায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে মাটি কাটা কিংবা বালু উত্তোলন করতে না পারায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে কিছু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এ দিকে ভাঙন পরিদর্শনে গিয়ে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভাঙ্গন রোধে এ মুহূর্তে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা দরকার। এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করাসহ ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি।