কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ফলাফল খারাপ করেছে এমন ২০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের সচিব প্রফেসর মো. আবদুস ছালাম।
সূত্র জানায়, এ বছর কুমিল্লার বোর্ডের অধীন ৬ জেলার ৩৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ৩৭২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছে মাত্র ৪৯ হাজার ৭০৪ জন। গড় পাসের হার ছিল ৪৯.৫২ শতাংশ। অস্বাভাবিক এ ফিল বিপর্যয়ে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ফল বিপর্যয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কেন এই ফল বিপর্যয়? এ কারণ অনুসন্ধানে মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জামাল নাসেরকে আহবায়ক এবং উপ-কলেজ পরিদর্শক বিজন কুমার চক্রবর্তী ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবুর রহমানকে সদস্য করে ৩ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফল বিপর্যয়ের কারণ এবং ভবিষ্যতে করণীয় নির্ধারণে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে বোর্ডের অর্জিত ৪৯.৫২ শতাংশের নীচে ফেল করা ২০১টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণ এবং ভবিষ্যতে ফলাফল ভাল করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিকট থেকে পরামর্শ চেয়ে ওই চিঠি দেয়া হচ্ছে বলে বোর্ড সূত্র জানিয়েছে। জেলাওয়ারী ফলাফল খারাপ করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হচ্ছে, কুমিল্লায় ৮৯টি, বি-বাড়িয়া ২৩, লক্ষ্মীপুরে ১৭, চাঁদপুরে ২৬, ফেনীতে ২২ এবং নোয়াখালী জেলায় ২৪টি।
জেলাওয়ারী শতকরা হিসেবে ফেনী জেলার হার সবচেয়ে কম ৪৪.৩১ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি চাঁদপুরের ৫৬.৩১ শতাংশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫৫.৯২, নোয়াখালীর ৫০.০৬ ও কুমিল্লার ৪৬.৪১ শতাংশ। সারা বোর্ডের মধ্যে পাসের হার কম কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার (১১.৯৮ শতাংশ)।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবদুল খালেক জানান, যে সব প্রতিষ্ঠান বোর্ডের গড় পাসের চেয়ে ফলাফল খারাপ করেছে তাদের চিঠি দিয়ে ফলাফল খারাপ করার কারণ এবং ভবিষ্যতে এ সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য পরামর্শ দিয়ে ৭ দিনের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণ কিংবা ভাল ফলাফলের জন্য যেসব পরামর্শ আসবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।
উল্লেখ্য- এ বছর জাতীয়ভাবে গড় পাসের হার ৬৮.৯১ শতাংশ হলেও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ৫০.৪৮ শতাংশ পরীক্ষার্থীই ফেল করেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ইংরেজি বিষয়ে ৩৭.৯৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী ফেল করেছে।