ষ্টাফ করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
গাজীপুর অফিস: ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এক যুবককে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃতুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। একই সাথে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে রায়ে।
সোমবার দুুপরে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জেলা জজ ফাতেমা নজীব এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত যুবক গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার বান্দাবাড়ী গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২২)।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফজলুল কাদের আদেশের খবর নিশ্চিত করে জানান, দন্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর ২০১১ সনে আমতৈল গ্রামের মৃত আব্দুস ছামাদের কন্যা শিল্পীর (১৮) সাথে বিয়ের প্রলোভনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। অবৈধ সম্পর্কের জেরে শিল্পী আনুমানিক ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এরপর থেকে শিল্পী তার প্রেমিক জাহাঙ্গীরকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে।
সূত্র জানায়, একই বছরের (২০১১) ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কালিয়াকৈরের আমতলী-বোয়ালী পাকা রাস্তায় শিল্পী তার প্রেমিকা জাহাঙ্গীরের সাথে দেখা করে তাকে সাথে নিয়ে যাওয়ার দাবী করে। এসময় জাহাঙ্গীর শিল্পীকে সড়কের পাশে গভীর বনের ভেতর নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তারপরও শিল্পী তার পিছু ছাড়তে না চাইলে জাহাঙ্গীর প্রেমিকা শিল্পীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে চলে যায়। ঘটনার পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে শিল্পীকে তার পরিবারের লোকজন খোঁজে পায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিন শিল্পীর মা সবুরজান বাদী হয়ে জাহাঙ্গীরকে অভিযুক্ত করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলা দায়েরের পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে।
পরবর্তি সময়, জাহাঙ্গীর গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরফ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পুলিশ ওই মামলায় ২০১১ এর ৩১ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর আদালত বাদীসহ মোট ১১জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আদালত তার রায়ে অভিযুক্তকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের অদেশ দেন। একই সঙ্গে জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়ারও আদেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফজলুল কাদের ও আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আতাউর রহমান আকাশ।