১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না

Slider শিক্ষা

f4597faa7a44736c1a3f08bb01483fa8-58fdb159af4fa

ঢাকা: ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি বছরে বিদ্যমান ফির ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না। অর্থাৎ বিদ্যমান টিউশন ফি যদি ১ হাজার টাকা হয়, তাহলে বছরে বড়জোর আরও ১০০ টাকা বাড়ানো যাবে। তবে ফি নির্ধারণ করবে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি; যেখানে দুজন অভিভাবক প্রতিনিধিও থাকবেন।

এমন আরও নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ‘বিদেশি শিক্ষাক্রমে পরিচালিত বেসরকারি বিদ্যালয় (ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল) নিবন্ধন বিধিমালা, ২০১৭’ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের একটি সংগঠনের প্রধান বিধিমালার কয়েকটি বিষয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছেন।

কয়েক দিন আগে জারি করা এই বিধিমালা অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ের নিজস্ব বা ভাড়ায় ভূমি ও ভবন থাকতে হবে। সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। থাকতে হবে ব্যবস্থাপনা কমিটি। বিদ্যালয়ের ধরনভেদে শিক্ষা বোর্ডসহ কয়েকটি দপ্তর নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ১৫০টি। এগুলোতে ১ লাখ ৯৩ হাজার ২৭৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে বাস্তবে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরও বেশি হবে।

অভিযোগ আছে, ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়গুলো ১৯৬২ সালের বেসরকারি বিদ্যালয় নিবন্ধন অধ্যাদেশের মাধ্যমে চলার কথা থাকলেও তা মানা হয় না। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে পুনঃভর্তির নামে ফি আদায় বন্ধ হলেও রাজধানীর কিছু ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল কৌশলে টিউশন ফি বাড়িয়ে সেই টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে ২০০৭ সালে একটি বিধিমালা করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

জানতে চাইলে ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম  বলেন, বিধিমালা করার আগে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। বিধিমালায় ব্যবস্থাপনা কমিটি, পুনঃভর্তি ফি, ভূমি, ভবনসহ কয়েকটি বিষয় যেভাবে রাখা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তিনি।

বিধিমালা অনুযায়ী, শিক্ষার গুণগত মান ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করে ব্যবস্থাপনা কমিটি শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, ভর্তি ফি, সেশন চার্জ ও অন্যান্য ফি নির্ধারণ করতে পারবে। তবে কোনো অবস্থাতেই এসব ফি যে নামেই হোক না কেন, তা বছরে ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না। ভর্তি নবায়ন, পুনঃভর্তি বা যেকোনো নামেই হোক, কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না।

সাময়িক নিবন্ধনের মেয়াদ হবে দুই বছর। নির্ধারিত শর্ত‍ পূরণ হলে স্থায়ী নিবন্ধন (নবায়নযোগ্য) সনদ দেওয়া হবে। এর মেয়াদ হবে তিন বছর। সাময়িক ও স্থায়ী নিবন্ধনের জন্য বিদ্যালয়ের ধরনভেদে আলাদা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। নবায়নের জন্যও পৃথক ফি হবে।

বিধিমালা অনুযায়ী, মহানগর এলাকায় প্রাথমিক স্তরের বিদ্যালয়ের জন্য শূন্য দশমিক ১৫ একর (১৫ শতাংশ) ভূমি থাকতে হবে। একই স্তরের বিদ্যালয় মহানগরের বাইরে হলে শূন্য দশমিক ৩৩ একর ভূমি থাকতে হবে। এভাবে বিদ্যালয়ের স্তর ও এলাকাভেদে ভূমির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ভবনের ক্ষেত্রেও একেক স্তরের জন্য একেক রকম (সর্বনিম্ন ৪ হাজার বর্গফুট থেকে ১১ হাজার বর্গফুট) জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের অনুপাত হবে প্রাথমিক স্তরে ১৫: ১, মাধ্যমিকে ২৫: ১ এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ৩০: ১।

বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তহবিলে স্তরভেদে দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। এই তহবিলের টাকা নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তোলা যাবে না। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অনুমোদিত বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষাক্রম অনুসরণ করতে হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান  বলেন, তিনি মাত্র বিধিমালাটি পেয়েছেন। এখন এটি বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। এ জন্য কঠোর হওয়ার প্রয়োজন হলে তা-ই হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *