দলবদলে নতুন নিয়ম আনতে যাচ্ছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। এবার ‘এ প্লাস’ খেলোয়াড়রা পছন্দমতো দল বেছে নিতে পারবেন। গত আসরে বরিশাল বুলসের হয়ে খেলতে চাননি মুশফিকুর রহিম। ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রবল ইচ্ছার কারণেই মুশফিককে রাজি করান গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাঈল হায়দার মল্লিক, যার ফলটাও পেয়েছেন হাতেনাতে। মুশফিককে নিয়ে বুলস মালিকের বেফাঁস মন্তব্য। তাই এবার দলবদলে খেলোয়াড়দের মতামতকে প্রাধান্য দেয়ার কথা জানান তিনি।
নিয়ম অনুসারে, আগের মৌসুমের খেলোয়াড়দের মধ্যে দেশী-বিদেশী যেকোনো চারজনকে ধরে রাখতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। এবার সেই নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। যেখানে থাকবে খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা। ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে বনিবনা না হলে ভিন্ন দলে যেতে পারবেন তারা— জানান মল্লিক। অর্থাত্ ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইলেও পুরনো দলে থেকে যাওয়া বা ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন খেলোয়াড়রা।
আগামী ৪ নভেম্বর মাঠে গড়াবে বিপিএলের পঞ্চম আসর। এর আগে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে দলগুলোকে একটি তালিকা জমা দিতে হবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বরাবর। যেখানে উল্লেখ থাকবে আগের মৌসুমের কোন কোন ক্রিকেটারকে তারা দলে রাখতে চায়। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটারদের নিলাম অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় একটি হোটেলে।
মল্লিক বলেন, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো কোন খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে চায়, আমরা সেই তালিকা চেয়েছি। তারা যেকোনো চারজনকে ধরে রাখতে পারবে, যাদের মধ্যে ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরি খেলোয়াড়ও রয়েছেন। তবে এটি খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরামর্শ করেই হওয়া উচিত। ফ্র্যাঞ্চাইজি ছেড়ে যাবেন নাকি থাকবেন— এ নিয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। যদিও ২৪ জুলাই শেষ তারিখ নয়। তবে আমরা আশা করছি, এ সময়ের মধ্যেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো খেলোয়াড়দের তালিকা দেবে।’
নতুন আসরে দলের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে ‘এ’ প্লাস বা ‘আইকন’ ক্রিকেটারের সংখ্যাও ৭ থেকে বাড়িয়ে ৮ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে গত মৌসুমের সাত আইকন ক্রিকেটারের সঙ্গে যুক্ত হবেন আরো একজন। নতুন আইকন হিসেবে উঠে আসছে মুস্তাফিজুর রহমানের নাম। এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে মাশরাফি বিন মতুর্জা, তামিম ইকবাল ও মুশফিকের দলবদলের বিষয়। বাকি আইকনদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ঢাকা ডায়নামাইটসে ও মাহমুদউল্লাহ খুলনা টাইটানসেই থাকছেন। গতবারের অন্য দুই আইকন সাব্বির রহমান ও সৌম্য সরকারের দল এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
অবশ্য সৌম্য এবার আইকন থাকেন কিনা, সেটা নিয়েও সংশয়। গভর্নিং কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ব্যাট হাতে খুব একটা ভালো ফর্মে নেই সৌম্য। তার পরিবর্তে ইমরুল কায়েসকে আইকন করতে চায় কাউন্সিল। কিন্তু ইমরুলের পুরনো দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের এতে আপত্তি আছে। আইকন খেলোয়াড়ের পারিশ্রমিকও বাড়ছে। মল্লিক বলেন, ‘যেহেতু এবার দলের সংখ্যা বেড়ে আটটি হয়েছে। তাই আইকন ক্রিকেটারের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। জাতীয় দলে যাদের পারফরম্যান্স ভালো, তাদেরই আইকন হিসেবে বিবেচনা করছি। এ বিবেচনায় নতুন আইকন মুস্তাফিজ। একই সঙ্গে বাড়ানো হবে অর্থের পরিমাণও।’
গত আসরে সাত আইকন ক্রিকেটারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৫ লাখ টাকা পেয়েছিলেন ডায়নামাইটসের সাকিব। ৫০ লাখ টাকা করে পেয়েছিলেন মাশরাফি, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। ৪০ লাখ টাকা করে পান সাব্বির ও সৌম্য। এবার সেটা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৬০ লাখ টাকা। এ নিয়ে মল্লিক বলেন, ‘আইকনদের জন্য গভর্নিং কাউন্সিল কোনো পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে দেয় না। ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সেটি খেলোয়াড়রাই ঠিক করেন। তবে আইকনদের মধ্যে কেউ ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে টাকা না পেলে বিসিবি সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত দেয়ার দায়িত্ব নেবে।’ চার বিদেশী ক্রিকেটার না পাঁচ— এ প্রসঙ্গে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মল্লিক, ‘বিদেশী চারজন নাকি পাঁচজন হবে, সেটা নির্ধারণ করতে আমরা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে মতামত চাইব। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’