এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি- দিনাজপুরের বীরগঞ্জে জমাজমির ঘটনায় পুর্ব শত্রুতার জেরে খড়ির ঘরে আগুন লাগিয়ে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ও ঘটনা স্থলে গিয়ে সুষ্ঠ তদন্তের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার ছলিমনগর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী মোছাঃ রাহিমা বেগম লিখিত অভিযোগে জানায়, ছলিমনগর মৌজার জে.এল নং-৯৬, খতিয়ান নং- ৮.১১, দাগ নং- ২৩৯.২৩৬.২৪০ এর ৮২ শতক জমির মধ্যে ৪৫ শতক জমি পরিবারিক ভাবে পাওনা থাকার পরেও দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের গড়ফতু গ্রামের মৃতঃ আব্দুল বাছেদের পুত্র ও কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জমিটি না দেওয়ার ইচ্ছায় গত ৯ ফেব্রুয়ারী সকাল ৭ টায় হঠাৎ জয়নাল আবেদীনের উপর হামলা চালায়। এতে দেবরের স্ত্রী রমর্জিনা বেগম ভাসুরকে বাচাতে এগিয়ে আসলে তাদের হামলায় মুমুর্ষ ভাবে আহত হয়। স্থানীওরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ্য করানো হয়। তারই প্রেক্ষিতে রাহিমা বেগমের পুত্র জাহেদুল ইসলাম ১৪ জুলাই বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় সিরাজুল ইসলাম, তার বড় ভাই রিয়াজুল ইসলাম, ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম, স্ত্রী রকেয়া বেগম সহ ৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। যার নং-৮। পাশাপাশি সিরাজুল ইসলাম ৮/৯ বছর পূর্বে কিছু জমি জয়নাল আবেদীনের পুত্র জাহেদুল ইসলামের নিকট বন্ধক রেখে ৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নেয়। যা অদ্যবধি জয়নাল আবেদীনের ভোগদখলে রয়েছে। মামলার কারনে টাকা ফেরৎ না দিয়ে বন্দকী জমিটি দখলের অপচেষ্টায় ব্যার্র্থ হয়ে গত ০৮ জুলাই শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় বাড়ী অদূরে ১ টি খড়ির ঘরে আগুন লাগিয়ে দিনাজপুর সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টট আদালত (২) বীরগঞ্জ এ ঘর পোরানোর ঘটনা সাজিয়ে ১৬ জনকে আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার দিন তার ছেলে, স্বামী, দেবর ও ভাতিজারা ঝাড়বাড়ীহাটে দোকানদারী নিয়ে ও বাজার করার কাজে ব্যাস্তছিল। যা হাটবাজারে পরিচিতি সকলেই দেখেছে। আগুনের সংবাদ শুনে আমার ছেলে, ভাতিজা সহ অনেকেই হাট হতে ছুটে আসে ঘটনা স্থলে। কিন্তু জমাজমি সংক্রান্ত পূর্ব শক্রতার জেরে সিরাজুল মাষ্টারের নির্দেশে তার ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের ১৬ জন নিরিহ লোকের বিরুদ্ধে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করছে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধমে তারা আইনকে শ্রদ্ধা রেখে মিথ্যা মামলাটি সঠিক তদন্তের জন্য ঘটনা স্থলে গিয়ে সরজমিনে পরির্দশনের আবেদন করেছে। সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন খতেজা বেওয়া, রমজিনা বেগম, জয়নাল আবেদীন, আব্দুর রহিম, নাসির উদ্দিন, রমজিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বীরগঞ্জের আত্রাই নদীতে সেতু নির্মানের দাবী,
নৌকা আর বাশেঁর সাঁেকা পারাপারের ভরসা
এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি- দিনাজপুরের বীরগঞ্জের উত্তর সীমান্তে আত্রাই নদীর উপর সেতু নির্মানের দাবী উঠেছে। চার জেলার লাখ লাখ মানুষের নদী পারাপারের মাধ্যম নৌকা আর বাশেঁর সাঁেকা।
দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী সহ ৪ জেলার মধ্যে সেতু বন্ধনের দ্বার উন্মোচন দাবী উঠেছে। উপজলোর উত্তর সীমান্তে শতগ্রাম ইউনিয়নের ঐকিহৃবাহী ঝাড়বাড়ী বাজার চৌরাস্তার মোড় থেকে আত্রাই নদীর খেয়াঘাট পার হয়ে পূর্বে নীলফামারী ১৭ কিলোমিটার, আত্রাই নদীর পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও ২২ কিলোমিটার, দক্ষিনে দিনাজপুর জেলা শহর ৩০ কিলোমিটার ও উত্তরে পঞ্চগড় জেলা সদর ২১ কিলোমিটার এই চার জেলার মানুষ উৎপাদিত কৃষি পণ্য বা গৃহপালিত পশু নিয়ে ঐতিহৃবাহী
বীরগঞ্জ পৌরসভাহাট (দিনাজপুর), গোলাপগঞ্জ (দিনাজপুর), কাহারোলহাট (দিনাজপুর), বোচাগঞ্জহাট (দিনাজপুর), লাহেরীহাট (ঠাকুরগাঁও), বালিয়াডাঙ্গীহাট (ঠাকুরগাঁও) ও গড়েয়াহাট (ঠাকুরগাঁও)সহ বিভিন্ন নামকরা হাটে যেতে অনেক পথ পেড়িয়ে শতশত কিলোমিটার অতিক্রম করে হাটগুলোতে কৃষি পণ্য বা গৃহপালিত পশু নিয়ে পৌছাতে হয়। এতে দীর্ঘ সময় ও অর্থ ব্যায় হয়। বিশেষ কারনে অনেকে হাটে পৌছার আগে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এ এলাকার মানুষের শত বছরের কাঙ্কিত আত্রাই নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করা হলে ১০০ কিলোমিটার পথ কমে মাত্র ১৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরত্বে কম খরচে কৃষি পণ্য বা গৃহপালিত পশু কেনা-বেচা করা সম্ভব বলে ভোক্তভোগি মানুষের মতামত। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে প্রবল ¯্রােতের মধ্যে খেয়া নৌকায় জীবনের ঝুকি নিয়ে লাখ লাখ মানুষকে পারাপার হতে হয়। আত্রাই নদী পারাপার হতে নৌকা ডুবির অনেক নজির রয়েছে।
অথচ সেতু নির্মাণ হলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, খানসামাসহ ঠাকুরগাঁও গড়েয়া হাট, নীলফামারী সদর উপজলোর নীলসাগর দীঘি, ভবানীগঞ্জ হাট এর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি ওই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ সরাসরি আসা-যাওয়া করতে পারবেন। এতে সহজ এ হয়ে উঠবে শিক্ষা, চিকিৎসা, বানিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন। স্থানীয় বলদিয়া পাড়া গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি সপ্তাহে দুইদিন ভবানীগঞ্জ হাট করি। এতে করে রাতের বেলায় সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। ভবানীগঞ্জের আলু ব্যবসায়ী রহিমুল ইসলাম বলেন, রবিবার ও বুধবার গড়েয়া হাট করি। তবে বর্ষার সময় রাতে ঘাটে নৌকা পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়।
ঝাড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসমিন আল বারী সাংবাদিকদের বলেন, ঠাকুরগাও জেলা শহর থেকে ঝাড়বাড়ী হয়ে নদীর জয়গঞ্জ ঘাট দিয়ে নীলফামারী জেলার সাথে ব্রিটিস আমল থেকেই যোগাযোগ ছিল। এ কারণেই উভয়দিকের রাস্তাটিও অনেক প্রসস্থ। এ এলাকায় বর্তমানে নীলসাগর নামে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। তবে সেতু নির্মান হলে নদীর দু-পারের হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি যোগাযোগসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে।
খানসামার আলোকঝাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আ.স.ম আতাউর রহমান বলেন, এই জয়গঞ্জ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়। এখানে সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের বড় বড় হাটগুলোর পন্যসামগ্রী সহজে অন্যত্র যেতে পারবে।