ভারতের কারাগারে বন্দি বাংলাদেশি ৩৫ জেলে

সারাদেশ
image_154084.patharghata photo nazma wife of jainalসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভারতীয় উপকূল রক্ষীর  হাতে আটক বাংলাদেশের ৩৫ জেলে কলকাতার আলীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছে। বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার দুটি ট্রলারের মালিক ও জেলে নিয়ে এর সংখ্যা মোট ৩৫ জন। ওই জেলেদের বাড়ি বরগুনা সদর , পাথরঘাটা উপজেলা ও পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায়। এদিকে দারিদ্র জেলে পরিবারে চলছে স্বজন হারানোর আহাজারি।
এ মাসের প্রথম সপ্তাহে তারা আটক হয় বলে জানিয়েছেন ট্রলার মালিকরা। বরগুনা সদর উপজেলার ট্রলার মালিক মো. বাবুল মিয়া  জানান, তার ‘এফবি ইজ-জাহান খেয়া’ নামক ট্রলারটি এ মাসের ৭ তারিখে মোট ১৭ জন জেলে শ্রমিক নিয়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। এদের মধ্যে ১৪ জনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়, আর তিনজনের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। ১৩ নভেম্বর তারা ভারতের উপকূল রক্ষীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে- এ মর্মে পাথরঘাটায় স্বজনদের জানানো হয়। জানার পরে তিনি গত ১৬ তারিখে ট্রলারসহ জেলে নিখোঁজ ও ১৯ তারিখ ভারতে বন্দি হওয়ার তথ্য উল্লেখ করে বরগুনা  থানায় দুটি জিডি করেন।
অপরদিকে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার খজিুরা গ্রামের মো. হাফেজ হাওলাদারের ছেলে মো. আলী আকবরসহ ১৮ জেলে একই সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে এখন আলিপুর কেন্দীয় কারাগারে বন্দি আছে বলে তার আত্মীয় মো.আলামিন হাওলাদার আজ শনিবার কালের কন্ঠকে জানান। আলী আকবর ওই ট্রলারের মালিক। ট্রলারের নাম এফবি জাহানারা। ওই ট্রলারে মোট ১৮ জেলে শ্রমিক রয়েছে, যার মধ্যে ১৬ জন খাজুরা গ্রামের এবং দুজন পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
কলাপাড়া উপজেলার আলীপুর মৎস্য বাজারের ব্যবসায়ী দুলাল কোম্পানীর মালিক মো.দেলোয়ার হোসেন দুলাল জানান, তারা ভারতে বন্দি হওয়া জেলেদের পরিচয়পত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দাখিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের দাবি দ্রুত দারিদ্র ওই জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি আরো জানান, ভারতে আটক হওয়ার পর জেলেরা টেলিফোনে জানিয়েছে, তাদের ভারতে নয় বাংলাদেশ সীমানা থেকে ভারতীয় উপকূল রক্ষীরা ধরে নিয়ে গেছে।
আজ শনিবার জেলেদের বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী কালের কন্ঠকে জানান, বাংলাদেশ সীমানায় অবৈধভাবে মাছ শিকার করার সময় সম্প্রতি মোংলাস্থ নৌবাহিনীর হাতে কয়েকটি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার ও জেলে আটক হওয়ায় প্রতিশোধ হিসেবে বাংলাদেশ সীমানায় ঢুকে ভারতীয় বাহিনী এ কাজ করেছে। আমরা দীর্ঘ দিন আমাদের জল সীমানায় ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ বন্ধের দাবি করছি।
এ ব্যাপারে কোষ্টগার্ড মংলার স্টাফ অপারেশন অফিসার  লে. কমান্ডার মো. আলাউদ্দিন নয়ন জানান, আমাদের প্রহরার সীমানা এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক জোন পর্যন্ত হলেও সমুদ্রগামী জাহাজ না থাকায় বাস্তবিক অবস্থা দেখা অসম্ভব। তাই প্রতিবেশী কোন বাহিনী বা জেলের অনুপ্রবেশ দেখা সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *