রাজ কেলেঙ্কারি: বাথরুমের দরজা বন্ধ করে কাঁদতেন প্রিন্সেস ডায়ানা

Slider সারাবিশ্ব

72175_ddd

 

 

 

 

 

 

 

বাথরুমে দরজা বন্ধ করে তার ভিতরে কাঁদতেন প্রিন্সেস ডায়ানা। তা সহ্য করতে পারতেন না বড়ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি বাথরুমের দরজার নিচ দিয়ে টিস্যু পেপার এগিয়ে দিতেন মাকে, যাতে তিনি মুখচোখ মুছতে পারেন। প্রিন্সেস ডায়ানার জীবনীকার অ্যানড্রু মর্টন এসব কথা স্বীকার করেছেন। তিনি প্রথমে প্রিন্সেস ডায়ানার ওপর একটি বই লেখেন। এর নাম দেয়া হয় ‘প্রিন্সেস ডায়ানা’। বইটি বেস্ট সেলার হয়। এরপর তাকে আরেকটু নবায়ন করে এবার লিখেছেন ‘ডায়ানা: হার ট্রু স্টোরি’। তবে এতে এমন কোনো অপ্রীতিকর বিষয় যুক্ত করা হয় নি, যা প্রিন্স উইলয়াম ও হ্যারিকে আহত করবে। এ বিষয়ে ৬৪ বছর বয়সী অ্যানড্রু মর্টন লন্ডনের আইটিভিতে ‘লুজ ওমেন’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে উপস্থাপক তাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। জানার চেষ্টা করেন ডায়ানার জীবনে ঘটে যাওয়া অজানা কোনো অধ্যায় সম্পর্কে। এমনতরো এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলে বসেন, একবার বাথরুমে ক্রন্দরত প্রিন্সেস ডায়ানাকে দরজার নিচ দিয়ে টিস্যু পেপার এগিয়ে দিয়েছিলেন প্রিন্স উইলিয়াম। অ্যানড্রু মর্টন বলেন, আমি উইলিয়াম ও হ্যারিকে আহত করতে চাই না। তাদের মা ও পিতার মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল তা বলে তাদেরকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে চাই না। উল্লেখ্য অ্যানড্রু মর্টন প্রথম ১৯৯২ সালে তার বিস্ফোরক বইটি লেখেন। ১৯৯৭ সালের আগস্টে প্রিন্সেস ডায়ানাকে হত্যা করা হয় বলে মনে করা হয়। এসব ইস্যু স্থান পেয়েছে তার বইয়ে। আগের বই ‘প্রিন্সেস ডায়ানা’রসঙ্গে আরো প্রায় ৩০০ পৃষ্ট যুক্ত করেছেন এবার এর লেখক অ্যানড্রু মর্টন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডায়ানার ‘অন্ধকার সময়ের’ আরো কিছু জানানোর । তাতে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে তার বিয়ের প্রসঙ্গ থাকবে। অ্যানড্রু মর্টন বলেছেন, তিনি মনে করেন এখনকার যুবক প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারি তাদের মা সম্পর্কে অনেক বেশি জানার আগ্রহ দেখাতে পারেন। তিনি বলেন, প্রিন্সেস ডায়ানাকে দেখা হতো ভবিষ্যত রাণী হিসেবে। তার সন্তানরা মা সম্পর্কে আরো জানতে চাইবে এমনটা মনে হয় আমার। ওই সময়ে যা ঘটছিল তার ভিতর দিয়েই উইলিয়াম ও হ্যারিকে দিন গুজরান করতে হতো। তারা তখন জানতেন কি ঘটছে। তাদের পিতা-মাতার মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল তা নতুন করে বলে আমি তাদের অস্বস্তি বাড়াতে চাই না। এরই মধ্যে প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, তখন তার বয়স মাত্র ১২ বছর। সেই সময়ে তাকে তার মা প্রিন্সেস ডায়ানার কফিনের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে বাধ্য করা হয়। এতে তিনি ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। হ্যারি আরো বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে কোনো শিশুকে দিয়ে এটা করানো উচিত নয়। এখানে উল্লেখ্য, অ্যানড্রু মর্টনের কাছে প্রিন্সেস ডায়ানার কিছু অডিও টেপ ছিল। ডায়ানা যখন দাম্পত্য জীবনে সঙ্কটে পড়েন টিপগুলো সে সময়কার। একদিকে স্বামী প্রিন্স চার্লস অন্য নারী ক্যামিলার প্রেমে মত্ত। অন্যদিকে ডায়ানা আরবের ধনকুবের ডোডি আল ফায়েদের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছিলেন। ১৯৯৭ সালে যখন তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তখন তার ওই গাড়িতে ছিলেন এই প্রেমিক। এ নিয়ে ইতিহাসের পর ইতিহাস লেখা হয়েছে। এসব কাহিনীর ফোনালাপ প্রকাশ হয়েছে। এ বিষয়ে অ্যানড্রু মর্টনের কাছে নাদিয়া সাওয়ালহা জানতে চেয়েছিলেন, ডায়ানা যখন এমন এক কঠিন সময়ে তখন তার টেপগুলো তার কাছে রাখার জন্য কি তিনি অনুতপ্ত বোধ করেন না। তিনি কি এটা বুঝতে পারেন নি যে, ডায়ানার ছেলেরা ভবিষ্যতে এসব বিষয় জানতে পারবে। জবাবে অ্যানড্রু মর্টন বলেন, ডায়ানা ও চার্লস দু’জনেই সাক্ষাতকার কাকে দেবেন তা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ডায়ানা আমাকে বেছে নিয়েছিলেন। প্রিন্স চার্লস বেছে নিয়েছিলেন জোনাথন ডিম্বলেবিকে। আমরা কি বলবো, তারা কি বলবেন তার একটি প্রস্তুতি তারা নিয়েছিলেন। এসব নিয়ে ডায়ানা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন ১৯৯১ সালে। এ সময়টাকে তিনি ‘অন্ধকার সময়’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ সময়ে তিনি ক্যামিলা পার্কার বোলসের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। এই সংঘাতের কথা ছড়িয়ে পড়ে সারা দুনিয়ায়। ডায়ানা রাজপরিবারের এমন একজন সদস্য ছিলেন যিনি এইডস আক্রান্তদের সঙ্গে প্রথমবার হাত মিলিয়েছেন। বিশ্বের জন্য মহান অনেক কাজ করেছেন তিনি। নিজেকে বিশ্বসভায় প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তার এ বাসনা ছিল তরুণি বয়স থেকে প্রিন্সেস ডায়ানা পর্যন্ত পুরোটা সময়। তিনি তার জীবনের সব কথা জানাতে চাইতেন। মনে করতেন এক মিথ্যার মধ্যে বসত তার। এর মধ্যে তিনি আর থাকতে চান নি। তিনি বিশ্বকে জানাতে চাইছিলেন নিজের আইকনিক ভাবমূর্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *