ঢাকা: ভোটের এখনো বছর দেড়েক বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ছায়া প্রচারণা। রমজানে ইফতার রাজনীতি ছিল জমজমাট। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই যোগ দিয়েছেন কোনো না কোনো ইফতার পার্টিতে। ঈদকে কেন্দ্র করে ভোট রাজনীতি এখন চাঙ্গা। বেশির ভাগ নেতাই এবার ঈদ করবেন নিজ নির্বাচনী এলাকায়। ঈদে ভোটের আগাম প্রচারণা সেরে রাখতে চান তারা।
অবশ্য প্রচারণায় অনেকটা এগিয়ে আওয়ামী লীগ। দলটির অনেক নেতাই নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়িয়েছেন রমজান মাসে। অংশ নিয়েছেন ইফতার পার্টিতে। ভোটার ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। শুনছেন তাদের অভাব অভিযোগ। খোঁজ নিয়ে ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদে সরকারি দলের বেশির ভাগ এমপিই নিজ এলাকায় অবস্থান করবেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন তারা। একই সঙ্গে চলবে নির্বাচনী প্রচারণা। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরবেন জনগণের সামনে। ভোটারদের কাছে আবারো ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট চাইবেন।
দলটির বর্তমান এমপি ও সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, সব রাজনৈতিক দল এখন রাজনীতি ও নির্বাচনমুখী। আগামী নির্বাচন যথাসময়েই হবে এবং বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে- এমন ধারণা পেয়েই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এজন্য ঈদুল ফিতরকে নির্বাচনী প্রচারের উপলক্ষ হিসেবে দেখছেন তারা। আওয়ামী লীগের বেশকজন বর্তমান ও সাবেক এমপি জানান, রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা নিজ এলাকায় পুরোদমে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। ভোটার, সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন- এমন ধারণাও মাঠ পর্যায়ে দিয়ে রাখছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
বগুড়া-১ (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে এবং সব দলই নির্বাচনে অংশ নেবে এমনটি ধরে নিয়েই আমরা প্রচারে নেমে পড়েছি। রমজান মাসে ব্যস্ত সময় পার করেছি। তবে, যেকোনো ঈদের সময় রাজনীতি সরগরম হয়। এখন এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। তাই ঈদ উপলক্ষে নির্বাচনমুখী রাজনীতিই খুব স্বাভাবিক। তিনি বলেন, এলাকায় রমজানের শুরু থেকেই প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি। যদি ২০১৮ সালের শেষ দিকে নির্বাচন হয় তাহলে হাতে খুব বেশি সময়ও নেই। আর আগামী নির্বাচনকে হালকাভাবে নেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। কারণ, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হলে রাজনীতি ও নির্বাচন উৎরানো কঠিন।
যশোর-৪ সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রঞ্জিত কুমার রায় বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের রাজনৈতিক কার্যাবলী এখন নির্বাচনমুখী। তাই, আমরা এই ঈদকে নির্বাচনমুখী কার্যক্রম পরিচালনার ঈদ হিসেবে মনে করছি। তিনি বলেন, আমাদের দলও সবসময় নির্বাচনমুখী দল। তাই আগাম প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে। আমি গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার মানুষের কাছে যাচ্ছি। ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছি। সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের সামনে তুলে ধরছি। আগামী নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে এই ঈদকে কাজে লাগাচ্ছি। গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি মানবজমিনকে বলেন, পুরো রমজানেই ইফতার, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও সামাজিক অনুষ্ঠানে নির্বাচনী এলাকায় সময় দিয়েছি। আমার মনে হয় গত ঈদের তুলনায় এই সময়ে এলাকায় বেশি সময় ব্যয় করেছি। নির্বাচনী এলাকায় বেশি সময় দেয়া আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার মনে হয় তাই। কারণ, এ রমজানে দলীয় ইফতারসহ যেসব অনুষ্ঠানে গিয়েছি সেখানে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কথাতেই আগামী নির্বাচনের প্রচারণার আমেজ পাওয়া গেছে। রমজানে যেসব অনুষ্ঠানে গিয়েছি সেখানে আমাদের মূল থিমটাই ছিল আগামী নির্বাচন নিয়ে। সেই নির্বাচনে জয়লাভের জন্য আওয়ামী লীগের সবার ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার বিষয়টিও আলোচনায় ছিল। আর আগামী নির্বাচনের জন্য সাংগঠনিকভাবে আমাদের যে প্রস্তুতি ও মনোবল আছে এর জন্যও এ ঈদটা গুরুত্বপূর্ণ। মাহবুব আরা গিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমার কিন্তু এলাকায় থাকার কথা ছিল না। কিন্তু রমজান ও ঈদের কারণে ১৯শে জুন আমাকে আসতে হয়েছে। তবে, যেহেতু এখন সংসদ চলছে তাই প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের অনুমতি নিয়েই আমি নির্বাচনী এলাকায় এসেছি। ঈদের সময় এলাকায় এসেছি। জনগণের ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করছি, কথা বলছি, তাদের সঙ্গে ইফতার করছি- এ বিষয়টি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য মানবজমিনকে বলেন, এখনো দেশের ৬০-৬৫ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। আমাদের শিকড়টা কিন্তু গ্রামেই। যারা শহরে থাকে তাদের বেশিরভাগই ঈদ করতে গ্রামে যায়। রাজনৈতিক নেতারাও এ সুযোগে গ্রামে যান। মানুষের সঙ্গে দেখা করেন, কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনীতি এখন আগের মতো নেই। আগে গ্রামে গিয়ে গ্রামের প্রভাশালী, মোড়লদের সঙ্গে কথা বলে, দেখা করে চলে আসলাম-সেই সময় এখন আর নেই। মানুষ এখন অনেক সচেতন। এখন যারা রাজনীতিতে আছেন যে যত বড় নেতাই হোক তাদের এখন গ্রামে যেতে হয়। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়, মিশতে হয়। ঈদ হলো তার একটা উপলক্ষ। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতি ঈদেই এমপিরা নিজ এলাকায় যান। জনগণের সঙ্গে কথা বলেন, মতবিনিময় করেন। এটা সব সময়ই হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা কিন্তু আসলেই শুরু হয়ে গেছে। আর ঈদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই একটা লক্ষ্য থাকে। মানুষের কাছে যাওয়া, নিজের ইমেজ ও প্রভাব বাড়ানো, মানুষের আস্থা অর্জন করা। তাই যেকোনো ঈদেই আমরা নিজ এলাকায় যাই। মানুষের সঙ্গে কথা বলি, তাদের সঙ্গে মিশি। গত বছরও গিয়েছি। এ বছরও যাব।
এলাকায় ঈদ করবেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা
নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন বিএনপির শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। দলের চেয়ারপারসনের তরফ থেকেও রয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের এলাকায় গিয়ে ঈদ করার নির্দেশনা। তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি চালাবেন কৌশলী নির্বাচনী প্রচারণা। খোঁজ-খবর নেবেন আন্দোলন-সংগ্রামে গুম-খুন ও পঙ্গুত্ববরণের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারেরও। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় দুস্থদের যাকাতের কাপড় বিতরণের মাধ্যমে চালাবেন গণসংযোগ। প্রকাশ্যে দলীয় কর্মসূচি পালনে বাধাবিপত্তির কারণে নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল হিসেবে ঈদকে বেছে নিয়েছেন তারা। এদিকে নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি আদায়ে জনমত গড়ে তোলার জন্য এই ঈদকে কাজে লাগাতে নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছেন দলীয় প্রধান। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, বিগত দিনে সরকারের রোষানলে পড়ে দলের অনেক নেতাকর্মী বাড়িঘর ছাড়া। তাদের পরিবার অসহায় জীবনযাপন করছেন। তাই দলের নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে নির্যাতিত ও গুম-খুনের শিকার পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এছাড়া সরকারের অনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার নির্দেশনা রয়েছে। এদিকে ঈদের পর নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দিয়ে মাঠে নামার ইঙ্গিত বিএনপি চেয়ারপারসন নিজেই দিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিবারের মতো এবারো ঢাকায় ঈদ করবেন। ঈদের নামাজের পর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। তবে ঈদের পর তিনি লন্ডন সফরে যাবেন। সেখানে অবস্থানরত বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিবারের সঙ্গে কিছুদিন সময় কাটাবেন। পাশাপাশি চোখের ফলোআপ চিকিৎসাও করাবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মেয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ করবেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ঈদ করবেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রতিবারই ঢাকায় ঈদ করেন। এবারও তিনি ঢাকায় ঈদ করবেন। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য তরিকুল ইসলাম ঈদ করবেন যশোরে। স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান অসুস্থতার কারণে এবার রাজধানীতেই ঈদ করবেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ঈদ করবেন চট্টগ্রামে। আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ঈদ করবেন গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে ঈদ করবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ঈদ করবেন নারায়ণগঞ্জে। পরে তার নির্বাচনী এলাকা রূপগঞ্জে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া ঈদ করবেন রায়পুরে (লক্ষ্মীপুর-২ আসন)। বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক বদরুজ্জামান খসরু ঢাকায় ঈদের নামাজ পড়েই তার নির্বাচনী এলাকা আড়াইহাজারে যাবেন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। এছাড়া আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজ নিজ এলাকায় ঈদ করবেন শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। তাদের মধ্যে যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ঈদ করতে নোয়াখালী যাবেন। নিজের নির্বাচনী এলাকা চাটখিল-সোনাইমুড়ীর স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার ঈদ করতে নিজ এলাকা বরিশালে যাচ্ছেন। আরেক যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন এবারো ঈদ করবেন নিজের নির্বাচনী এলাকা নরসিংদীতে। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ঈদ করবেন লক্ষ্মীপুরে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি ঈদের পরদিন যাবেন নিজ নির্বাচনী এলাকা ফেনীর দাগনভুইয়া । সেখানে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি চালাবেন কৌশলী প্রচারণা। এছাড়া আন্দোলন-সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নেবেন বলে জানান তিনি। নেত্রকোনা-১ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ঈদ করতে এলাকায় যাবেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবি ঈদ করতে যাবেন গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের জন্মস্থান ঢাকায়। তাই রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় ঈদ করবেন তিনি। যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু মামলার কারণে ঈদ করবেন ঢাকায়। তবে ঈদের পরদিন টাঙ্গাইলে যাবেন। নিজের নির্বাচনী এলাকা গোপালপুর-ভূঞাপুরের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। সাজার কারণে বড় ভাই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু যদি নির্বাচন না করতে পারেন তাহলে টাঙ্গাইল সদরেও তিনি নির্বাচন করবেন। তাই দুটি এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। যুবদলের সাবেক গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুল আলম পিংকু ঈদ করবেন ফরিদপুরে। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ফরিদপুর সদরের গরিব দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন তিনি। বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম এবার ঈদ করবেন নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জে। বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ঈদ করবেন নাটোরের লালপুরে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ঈদ করবেন লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ঈদ করবেন নরসিংদীর মনোহরদীতে। স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ঈদ করবেন ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ঈদ করবেন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুরে যাবেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদেও সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি নির্বাচনের কৌশলী প্রচারণা চালাবেন তিনি।
অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, ঈদে যার যার এলাকায় গিয়ে জনগণের সঙ্গে কথা বলার জন্য ম্যাডাম আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। ঈদের আগে এবং পরে এলাকায় অবস্থান করে মানুষকে সরকারের দুর্নীতির বিষয়ে অবহিত করাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা আছে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবি আদায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তাদের জানাতে হবে আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জনগণের অধিকার রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য তৈরি করতে হবে। তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, দেশে এখন চলছে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র। এর প্রধান নিয়ন্ত্রক হলেন শেখ হাসিনা। সহকারী নিয়ন্ত্রক হলেন এমপিরা। তারা ইফতার পার্টিতে হামলা চালাচ্ছে। এমনকি ঈদের শুভেচ্ছা পোস্টার লাগাতে বাধা দিচ্ছে। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা দলের কর্মসূচি পালন করছি। আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল বলেন, ঈদের পরদিন গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদীতে যাবো। সেখানে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবো। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে অবশ্যই নির্বাচন করবো। ফরিদপুর সদরের সম্ভাব্য প্রার্থী মাহবুবুল আলম পিংকু বলেন, আমি উপজেলা নির্বাচন করে লক্ষাধিক ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছি। আগামী নির্বাচন করার জন্যই এলাকার নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। আগামীতে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে অবশ্যই নির্বাচন করবো।