এক টুইটার পোস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ৭১ বছর বয়সী রামনাথ হবেন ‘ব্যতিক্রমী রাষ্ট্রপতি’। একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে ‘সংবিধান সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ও বিবেচনাবোধ দ্বারা জাতি উপকৃত হবে’।
দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ রামনাথ একজন কৃষকের সন্তান। দলিত সম্প্রদায়, তথা পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার কারণে এবং সাধারণ জীবনযাপনের জন্য রামনাথকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপির নেতারা।
২০১৫ সালের ৮ আগস্ট বিহারের রাজ্যপাল নিযুক্ত হন রামনাথ। তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালে উত্তর প্রদেশের কানপুর দেহাতে। কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বাণিজ্য ও আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে এই দলিত নেতা উত্তর প্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সদস্য হন। ২০০৬ সালের আগ পর্যন্ত দুই মেয়াদে ১২ বছর তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন।
রামনাথ পেশায় আইনজীবী। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লি হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ছিলেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত তিনি দিল্লি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ১৬ বছর ওকলাতি করেন।
রামনাথ ১৯৭১ সালে দিল্লির বার কাউন্সিলে নথিভুক্ত হন। তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রামনাথ দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করা বিজেপির ইউনিট ‘বিজেপি দলিত মোর্চা’র সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি অল ইন্ডিয়া সমাজের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি দলের জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের শীর্ষ সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন রামনাথ।
রামনাথ লক্ষ্ণৌয়ের আমবেদকার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার অল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের বোর্ড সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ২০০২ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন। রামনাথের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
দলিত সম্প্রদায় থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে বিজেপি নিম্নবর্গ ও দরিদ্র ভোটারদের সমর্থনকে আরও দৃঢ় করার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ‘রামনাথ দলিত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন এবং দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন। আমরা আশা করি, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে নির্বাচনে সবার সম্মতি থাকবে।’
বিরোধী দলের সম্মতি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্যক্তিগতভাবে রামনাথের বিষয়ে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর পূর্বসূরি ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদি বিহার, ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। বিজেপির প্রধান অমিত শাহ জানিয়েছেন, বিজেপির সব শরিক দলকেই এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে।