কী তাঁদের?

Slider শিক্ষা

551c4fac61d564ae5d6f1e6afe7937cb-5943e38a8bc34


শুধু বাহার উদ্দিন নন, একই কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি আরও অনেক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী। এ রকম ছয়জন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁদের মধ্যে তিনজন প্রবেশপত্রই পাননি।

গত বছর ওই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নিজেরা লিখে পরীক্ষা দিতে পারেন না। তাই শ্রুতলেখক দরকার হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তাঁদের চেয়ে নিম্ন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত কাউকে লেখক হিসেবে নিতে হয়। এ জন্য ওই শ্রুতলেখকের প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমতিপত্র দরকার হয়। কিন্তু সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওই নিয়োগটির জন্য তাঁরা গতকাল বিকেলে প্রবেশপত্র পেয়েছেন। আজ সকালে ছিল পরীক্ষা। এত অল্প সময়ের মধ্যে কারও পক্ষে শ্রুতলেখক জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই তাঁরা পরীক্ষা দিতেও পারেননি।

এস এম বাহার উদ্দিনের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হুয়াকুয়া গ্রামে। একই গ্রামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আরেক পরীক্ষার্থী মো. আল মামুন ও গাজীপুরের পূবাইলের রাশিদা বেগমেরও একই অবস্থা হয়েছে। তাঁরা জানালেন, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা প্রবেশপত্র পেয়েছেন। প্রবেশপত্র ছাড়ার তারিখ ছিল ১৮ মে। এত দেরিতে প্রবেশপত্র পৌঁছানোর জন্য তো তাঁরা দায়ী নন। তাহলে তাঁরা পরীক্ষা দেওয়া সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন কেন?

আর এই পরীক্ষার প্রবেশপত্রই পাননি খুলনার তেরখাদা উপজেলার আবনালী গ্রামের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. ইকরাম আলী, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার জোঠরি গ্রামের মাহমুদা খাতুন ও ঢাকার মুক্তা খাতুন।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মুক্তা খাতুন বলেন, ‘এমনিতেই আমরা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করি। চাকরি জোগাড় করা এখন অনেক কঠিন। তার ওপর প্রবেশপত্রই যদি না পাই, পরীক্ষা দেব কীভাবে? আমাদের এভাবে বঞ্চিত করলেন কারা? আমরা এর প্রতিকার চাই।’

ওই নিয়োগের প্রবেশপত্র ইস্যু করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইকবাল হোসেন খান। তিনি অধিদপ্তরের বিভাগীয় বাছাই/নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির  বলেন, ‘ওই পরীক্ষার্থীদের আগেই শ্রুতলেখক জোগাড় করে রাখা প্রয়োজন ছিল। তবে কেন তাঁরা প্রবেশপত্র দেরি করে পেলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এই পরীক্ষার্থীরা চাইলে ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে দেখা করতে পারেন।’

আগেই শ্রুতলেখক জোগাড় করে রাখার বিষয়ে নূরুল কবিরের বক্তব্যের ব্যাপারে ওই পরীক্ষার্থীরা বলেন, শ্রুতলেখক আগেই জোগাড় করে রাখা সম্ভব নয়। এই পরীক্ষার আবেদন করা হয় প্রায় এক বছর আগে। কখন পরীক্ষা হবে, তা জানা যায় না। আগে থেকে লেখক ঠিক করে রাখলে সেই লেখক তত দিনে অন্য শ্রেণিতে উঠে যেতে পারেন। তখন তাঁকে আর লেখক হিসেবে নেওয়ার বৈধতা না-ও থাকতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *