এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুড়া ঘোনাপাড়া গ্রামে গরুতে গাছ খাওয়াকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু পরিবারকে মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। বর্তমানে ওই ৩ জন গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও আহতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধায় জোতকুড়া ঘোনাপাড়া গ্রামের বড়দেব মজুমদারের গরু পার্শ্ববর্তী ইউনুস মোল্লার বাগানে যেয়ে কয়েকটি গাছ খেয়ে ফেলে। এ সময় ইউনুস মোল্লা বড়দেব মজুমদারের স্ত্রী মিঠু মজুমদারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় বড়দেব মজুমদারের রনজিত মজুমদার (১৪) প্রতিবাদ করলে ইউনুস মজুমদারের নেতৃত্বে একই গ্রামের কামরুল মোল্লার ছেলে নাসিম মোল্লা, পাগল মোল্লার ছেলে শফিক মোল্লা, ফারুক মোল্লার ছেলে স¤্রাট মোল্লা, আবুল মোল্লার ছেলে শাহবুদ্দিন মোল্লা, আওলাদ মোল্লার ছেলে শিহাব মোল্লা বাশেঁর লাঠি, রড ও লাঠি নিয়ে বড়দেব মজুমদারের বাড়ীতে হামলা চালায়। তারা বড়দেব মজুমদারের স্ত্রী মিঠু মজুমদার (৩৫), বড়দেব মজুমদারের ছেলে রনজিত মজুমদার (১৪) ও নারায়ন মজুমদারের ছেলে নিউটন মজুমদারকে বেধড়ক মারপিট ও বাড়ী ঘর ভাংচুর করে। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা চলে যায়।
এ ব্যাপারে আহত গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বড়দেব মজুমদারের স্ত্রী মিঠু মজুমদার সাংবাদিকদের জানায়, আমার একটি গরু ইউনুস মজুমদারের বাগানে গেলে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এ সময় আমার ছেলে প্রতিবাদ করলে তারা সবাই দল বেধে আমাকে আমার ছেলে রনজিত ও নিউটনকে মারপিট করে ও আমাদের বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে। পরে স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তিনি আরো বলেন, আমরা হিন্দু মানুষ বলে কি আমাদেরকে এ ভাবে তারা মারবে আমরা কি কোন বিচার পাব না। নাকি আমরা ভারতে চলে যাব আপনারা বলেন।
এ ব্যাপারে ইউনুস মোল্লার সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানা যায়।
গোপালগঞ্জে কাশিয়ানীতে কালভাটের মুখে সরকারি জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ : প্রশাসন নীরব
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কালভাটের মুখ দখল করে খালের মধ্যে সরকারি জায়গায় দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে করে ওই এলাকায় বর্ষা মৌসুমে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার পিংগলিয়া গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুস সালাম শেখ পিংগলিয়া সিদ্দিকীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা বাজার সংলগ্ন কালভাটের মুখ ও খাল অবৈধ ভাবে দখল করে আরসিসি পিলার দিয়ে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। এতে করে বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকায় পানি নিষ্কাশন বাঁধাগ্রস্থ হওয়ার আশংকা রয়েছে। ফলে ওই গ্রামের বেশ কিছু এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়বে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, ওই সরু খাল দিয়ে এক সময় নৌকাও চলাচল করেছে। কিন্তু বর্তমান খালের মধ্যে ও খালের মুখে কালভাটের মুখ ঘেঁষে অবৈধ দখলদাররা ঘর-বাড়ি নির্মান করায় পানি নিষ্কাশনেও বিঘœ ঘটছে।
মো: আব্দুস সালাম শেখ সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাত দুই সরকারী জায়গা জড়াতে পারে।
কাশিয়ানী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আল মোক্তাদির হোসেন বলেন, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ২৪ প্রবীণের ছানি জনিত অন্ধত্ব ঘুচেছে
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ২৪ প্রবীণের ছানি জনিত অন্ধত্ব ঘুচেছে। প্রবীণ কল্যাণ কর্মসূচির আওতায় রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) প্রবীনদের চোখের ছানি অপারেশন করে তাদের অন্ধত্ব দূর করেছে। এছাড়া তারা ১১২ জন প্রবীণকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেছে।
মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনষ্টিটিউটের কারিগরী সহায়তায় বিণামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সহায়তা, চক্ষু পরীক্ষা, চশমা ও ঔষধ প্রদানসহ চোখের ছানি অপারেশনের ব্যবস্থা করে সংগঠনটি। এতে ওই উপজেলার কলাবাড়ী, রাধাগঞ্জ, রামশীল ইউনিয়নের মোট ১১২ জন প্রবীণকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও ২৪ জনের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়।
এ স্বাস্থ্য সেবা ক্যাস্পে শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট এর পরিচালক ডাঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ (পিন্টু), সংগঠক দীপক সরকার এবং রিক সংস্থার প্রবীনচীর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ ফারুক হোসেন, সিনিয়র অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান খাঁন, ম্যানেজার মোঃ রুবেল ফকীর, ম্যানেজার মোঃ মিজানুর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তি বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনকারী রাধাগঞ্জ গ্রামের প্রবীণ উপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমিসহ শতাধিক প্রবীণ এখান থেকে চিকিৎসা সেবা পেয়েছে। তারা ২৪ প্রবীণের ছানি জনিত অন্ধত্ব দূর করেছে। আমাদের এলাকার প্রবীণদের জন্য এ সেবা বৃদ্ধি করা উচিৎ।
রিক সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রিক দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে প্রবীণদের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্রবীণ ইস্যুতে কাজ করতে গিয়ে রিক তার অভিজ্ঞতা থেকে উপলব্ধি করেছে যে, দুস্থ ও দরিদ্র প্রবীণদের সুনির্দিষ্ট চাহিদা পূরণের জন্য আর্থিক এবং বস্তুগত সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন। এই পরিপ্রেক্ষিতে রিক তার নিজস্ব অর্থায়নে প্রবীণদের কল্যাণের জন্য প্রবীণ কল্যাণ কর্মসূচি শিরোনামে একটি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। এই কর্মসূচির মুল লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত এবং সমাজের অন্যান্য দুঃস্থ ও দরিদ্র প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখা।
ওই সংস্থার সিনিয়র অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান খাঁন বলেন, অন্যান্য বয়সীদের তুলনায় প্রবীণদের স্বাস্থ্য সমস্যা অপেক্ষাকৃত বেশী হয়ে থাকে। এ বিষয়ে সহায়তা পাওয়ার পরিমাণ খুবই অপ্রতুল। অর্থের অভাবে যে সকল দুঃস্থ এবং দরিদ্র প্রবীণরা রোগে ভুগছেন এবং প্রয়োজনীয় মূহুর্তে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার ন্যূনতম সুযোগ পাচ্ছেন না, সেই সকল প্রবীণদের চিহ্নিত করে ‘রিক’ এর সকল কর্ম এলাকায় চিকিৎসক নিয়োগ করে তাদের জন্য স্বাস্থ্য সহায়তা এবং স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্মসূচি ও চক্ষু সেবা শিবির আয়োজন করে চোখের অস্ত্রোপ্রচারসহ চোখের অন্যান্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট এর পরিচালক ডাঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ (পিন্টু) বলেন, রিক প্রতি মাসেই গোপালগঞ্জ জেলার প্রবীণদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রবীণরা উপকৃত হচ্ছেন। আমরা এখানে কাজ করছি। অনেক প্রবীণ ছানি জনিত অন্ধত্বে ভুগছেন। কিন্তু হাপাতালে যেতে পারেন না। তারা এ ক্যাম্প থেকে চোখের আলো ফিরে পাচ্ছে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ভাঙা সাঁকোই ১৫০ পরিবারের একমাত্র ভরসা
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দেবগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাতায়াতের একমাত্র সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কোটালীপাড়া উপজেলার এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটির সদস্যদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রকল্পের সভাপতি শশধর পান্ডে বলেন, ১৫০টি পরিবারের প্রায় ৬০০ মানুষ এ সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। লোকজন পারাপারের সময় পড়ে আহত হয়। বেহাল এ সাঁকোটি মেরামত বা এখানে একটি নতুন পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এখানকার বাসিন্দা আক্কাস আলী সরদার বলেন, সাঁকোটি বিকল হওয়ায় এখানে পণ্য ও যান চলাচলের কোনো ব্যবস্থা নেই। এটি আমাদের কাছে এখন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। আমরা নিজেরা চাঁদা দিয়ে মেরামত করে কোনো রকমে সচল রেখেছি। যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়লে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এখানে নতুন একটি পাকা সেতুর দাবি জানাচ্ছি।
সাঁকোটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজী আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই প্রকল্প তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পাস হলেই সাঁকোটি সংস্কার করা হবে।