রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর সময় দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। গত তিনদিনের প্রবল বর্ষণের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস শুরু হয়। এতে করে সমগ্র এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার এবং পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য বিভিন্ন সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা গতকাল থেকেই উদ্ধারকার্যে অংশগ্রহণ করে। আজ ভোরে রাঙ্গামাটির মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে রাঙ্গামাটি জোন সদরের নির্দেশে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল উক্ত সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালীন আনুমানিক সকাল ১১টায় উদ্ধার কার্যস্থল সংলগ্ন পাহাড়ের একটি বড় অংশ উদ্ধারকারীদলের উপর ধসে পড়লে তাঁরা মূল সড়ক হতে ৩০ ফিট নিচে পড়ে যান। পরবর্তীতে একই ক্যাম্প থেকে আরও একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ০২ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ০৪ জন সেনাসদস্যকে নিহত এবং ১০ জন সেনাসদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। আহতদের মধ্যে ০৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সিএমএইচ এ স্থানান্তর করা হয়। উদ্ধার কার্যক্রম চালানো সময় ভূমিধসে পতিত সেনাসদস্য সৈনিক মো. আজিজুর রহমান এখনো পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতরা হলেন- মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, ক্যাপ্টেন মোঃ তানভীর সালাম শান্ত, কর্পোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হক ও সৈনিক মোঃ শাহিন আলম। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক আজ বিকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উদ্ধার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি হতাহত সকল সেনাসদস্য ও তাঁদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজা-উল করিম শাম্মী মানবজমিনকে জানান, গতকাল রাত থেকে পাহাড় ধসের ফলে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ককে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। আজ সকালে ওই সড়ক সংস্কার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য সেনাবাহিনীর একটি দল কাজ করছিল। এসময় অন্য একটি পাহাড় ধসে পড়লে সেনাসদস্যরা চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে। তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর অফিসারও রয়েছেন। তবে তাৎক্ষনিকভাবে হতাহতের সংখ্যা জানাতে পারেননি আইএসপিআর-এর এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত রাত থেকে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রায় ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।