সাদীকে পলাতক আসামি হিসেবে এফবিআই দীর্ঘদিন থেকে খুঁজছিল। প্রায় ১০ বছর আগে ২০০৬-০৭ সালের দিকে তিনি ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করেছিলেন এবং ব্যাংকের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাঁর আমেরিকান পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, নিজেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন বিদেশ সংক্রান্ত উপদেষ্টা হিসেবে দাবি করতেন সাদী। ক’বছর আগে ছয়জন মার্কিন কংগ্রেসম্যানের সাক্ষর জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সর্বশেষ, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির কথিত সাক্ষাতের কথা বলে আলোচনায় আসেন। নিউইয়র্কের একাধিক বাংলা সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে জয়ের কথা হয়েছে। তবে সাফাদি নিজে কিংবা জাহিদ এফ সারদার ওই কথিত সাক্ষাতের পক্ষে কোনো তথ্য বা প্রমাণ হাজির করতে পারেননি। সজীব ওয়াজেদ জয়ও ওই বৈঠকের খবর অস্বীকার করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাতিসংঘের ৭১ তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে এসেছিলেন, তখন জাতিসংঘের সদর দপ্তরের বাইরে প্রতিবাদ সমাবেশের অন্যতম আয়োজক ছিলেন জাহিদ এফ সর্দার সাদী।
গত ১৭ মে পলাতক জাহিদ সর্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিউইয়র্কের বাংলা সংবাদমাধ্যম টাইম টিভি রোববার (১১ জুন) সংবাদ প্রকাশ করেছে। গ্রেপ্তারের পর পরই তাকে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে হাই সিকিউরিটি ফেডারেল টেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে।
জাহিদ এফ সর্দার ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে অবস্থানকালীন সময়ে সেখানে গ্যাস স্টেশনের ব্যবসা করতেন। ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড চেক মেশিনের সুবিধা নেন তিনি। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ৫৪টি প্রতারণামূলক লেনদেন করেছেন। ইউনাইটেড স্টেটস ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট মিডল ডিস্ট্রিক্ট অব ফ্লোরিডায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, জাহিদ এফ সর্দার সাদি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের চক্রান্তের আশ্রয় নিয়েছেন।
জাহিদ সর্দার দীর্ঘদিন থেকে নিউ ইয়র্কসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। অনেকের ঘরেই তিনি অতিথি হিসেবে অবস্থান করেছেন। তবে কাউকেই তার ব্যক্তিগত সমস্যা বা ফেরারি হওয়ার বিষয়টি জানাননি। একটি সূত্রের মতে, জাহিদ এফ সর্দারকে গ্রেপ্তারের পেছনেও কলকাটি নেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন্দল কলহ। ওয়াশিংটনে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জাহিদ এফ সর্দারের অবস্থান জানানোর পর পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে টাইম টেলিভিশন তাদের সংবাদে উল্লেখ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বি এন পি’র নামে অনেক নেতা থাকলেও তাদের কোনো কমিটি নেই অনেক দিন থেকে। কেউ কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলতেও রাজি নন এখন। নিউইয়র্কে এন পি’র একটি সক্রিয় গ্রুপ থেকে প্রথম আলোকে বলা হয়েছে, জাহিদ এফ সর্দারকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জালিয়াতির কারণে কেন্দ্রের নির্দেশে নিউইয়র্কে অবস্থানরত দলের নেতা সাদেক হোসেন খোকা জাহিদ সর্দারকে বহিষ্কার করেছেন বলে বি এন পি’র লোকজন জানিয়েছেন।