খুলনা কর অঞ্চল আয়কর রিটার্ন দাখিলে দেশের প্রথম স্থানে

Slider খুলনা

income tax khulna

 

 

 

 

 

মোহাম্মদ রাহাদ রাজা (ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি) #  খুলনা কর অঞ্চল চলতি অর্থ বছরেই  ১ লাখ নতুন করদাতা নিবন্ধনের রেকর্ড অর্জনের পর এবার দেড় লাখ আয়কর রিটার্ন দাখিলের মাইলফলক অতিক্রম করার সাফল্য অর্জন করেছে। যা দেশের সকল কর অঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে। শুধু এসব মাইলফলকই নয়, সামনে রয়েছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হাতছানি। যা বিগত অর্থ বছরগুলোতে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ সাফল্যও লুফে নিতে খুলনা কর অঞ্চলের কমিশনার মোঃ ইকবাল হোসেনের দক্ষ নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক কাজ করছে কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সব মিলিয়ে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছেছে খুলনা কর অঞ্চল। এদিকে দেড় লাখ আয়কর রিটার্ন দাখিলের সাফল্য উদ্যাপনে গতকাল কর ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খুলনা কর অঞ্চলের দেয়া তথ্যমতে, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা নিয়ে খুলনা কর অঞ্চল গঠিত। এ কর অঞ্চলের আওতায় ২২টি সার্কেলে বর্তমানে ইটিআইএন ভূক্ত করদাতা রয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার। আর পুরাতন টিআইএনসহ মোট করদাতা রয়েছে ৩ লাখ ৩৭ হাজার। এসব করদাতাদের করদানে উৎসাহদানে খুলনা কর অঞ্চল নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর ফলে চলতি অর্থ বছর (২০১৬-২০১৭) জাতীয় রাজস্ব কোর্ডের সামগ্রিক কার্যক্রমে গত মে মাসে খুলনা কর অঞ্চলে দাখিলকৃত রিটার্ণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ২১৭টি। দেশের অন্য কোন কর অঞ্চল এই মাইলফলক অতিক্রম করতে পারেনি। ১ লাখ ১০ হাজার রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে পরের অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা কর অঞ্চল। এর আগে (২০১৫-২০১৬) অর্থ বছরে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ছিল ৮৩ হাজার ৫৪১টি। চলতি অর্থ বছরে গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৮১ শতাংশ আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে। আর (২০১৪-২০১৫) অর্থ বছরে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৪১৮ টি। শুধুমাত্র এ রেকর্ড নয়, এর আগে গত মে মাসেই এক লাখ নতুন ইটিআইএন নিবন্ধনের মাইলফলক অতিক্রম করে। এ অর্থবছরেই নতুন করদাতা সৃষ্টির এই রেকর্ড অর্জন করা হয়। যা গত অর্থ বছরের চেয়ে প্রায় পাঁচগুণ বেশি। এ ক্ষেত্রেও সমগ্র দেশের মধ্যে এগিয়ে আছে খুলনা কর অঞ্চল। অভিনব এই সাফল্যের পেছনে খুলনা কর অঞ্চল বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর মধ্যে ট্যাক্স ট্রেনিং ফর টিচার্স (টিটিটি) ও মোবাইল টিম ফর টিআইএন (এমটিটি) কর্মসূচি চালুকরণ, পেইরোল ট্যাক্স সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, কর অঞ্চলের অধীনে থাকা ১০ জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের সাথে পত্র ও ই-মেইল প্রেরণ, আয়কর মেলা, আয়কর সপ্তাহ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) ও পৌরসভা ডিজিটাল সেন্টার (এমডিসি) উদ্যোক্তাদের ই-টিআইএন নিবন্ধন বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্টোকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য।
খুলনা কর অঞ্চলের কমিশনার মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, খুলনা কর অঞ্চলের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রম, প্রশাসনের সহযোগিতা ও করদাতাদের আন্তরিকতায় আজকের এই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমের একটি উল্লে¬খযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। এ সফলতার জন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এখনও একটি সাফল্য অর্জন বাকী রয়েছে। সেটি হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। সেদিকেই এগিয়ে চলেছি। এ বছর খুলনা কর অঞ্চলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়ে তিনি আশাবাদী।
খুলনা কর আপীল কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, খুলনা কর অঞ্চলের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই সাফল্য এসেছে। এছাড়া করদাতারাও স্বেচ্ছায় তাদের আয়কর দিতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এসব সাফল্যের জন্য তিনি খুলনার বর্তমান কর কশিনারের প্রশংসা করেন।
এদিকে দেড় লাখ আয়কর রিটার্ন দাখিলের মাইলফলক অতিক্রম করার সাফল্য উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল রবিবার বিকেলে খুলনা নগরীর বয়রা এলাকার কর ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান, ইফতার ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতে কর কমিশনার মোঃ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন খুলনা কর আপীল কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়, মংলা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মারগুব আহমেদ, খুলনা কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনার কেএম অহিদুল আলম, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপীল) কমিশনার আব্দুল মান্নান সিকদার, খুলনা বিভাগের স্থানীয় সরকার পরিচালক  জোসেন আলী খোন্দকার, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার (উপ সচিব) শাহ আলম সরদার, আঞ্চলিক লোক প্রশাসনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক সৈয়দ রবিউল আলম। এছাড়া খুলনা কর অঞ্চলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আয়কর আইনজীবী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার দরদাতারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *