আজ রোববার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ খবর জানানো হয়। গতকাল শনিবার গভীর রাতে ইমরান আহমেদ ও তাঁর গাড়িচালক মো. শামিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান আহমেদ জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় দাওয়াবিষয়ক কমিটির শুরা সদস্য। তিনি জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন ২০১২ সালে।
ইমরান আহমেদের সম্পৃক্ততা কতটুকু সে সম্পর্কে মুফতি মাহমুদ খান আরও বলেন, আতিয়া মহলে অভিযানের আগে সাজিদ নামের এক ব্যক্তি পালিয়ে যান। তিনি ঢাকায় এসে ইমরান আহমেদের মহাখালীর বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। সাজিদ জেএমবির নতুন আমিরের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচর। নতুন এই আমিরের নাম আবু মুহারিব।
র্যাব জানায়, সাজিদ ছাড়াও জেএমবির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অনেককেই ইমরান তাঁর বাসায় আশ্রয় দিয়েছেন এবং অর্থ সাহায্য করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এই তালিকায় জুন্নুন শিকদারও আছেন। ধারণা করা হচ্ছে জুন্নুন শিকদার সিরিয়ায় রয়েছেন। গত বছর র্যাবের অভিযানে আবদুল হাকিম গ্রেপ্তার হন। সম্প্রতি ইমরান আইনি সহযোগিতার জন্য আবদুল হাকিমের স্ত্রীকে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন। অস্ত্র, গোলাবারুদ ও দাওয়াতি উপকরণ উদ্ধার হয়েছে ইমরানের কারখানা ও বাসা থেকে।
জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পেরেছে, জেএমবি এখন দাওয়াতি কার্যক্রমে গুরুত্ব দিচ্ছে বেশি। ইমরান গুলশান, বনানী ও মিরপুর এলাকায় জেএমবিতে সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন। এ ছাড়া দেশের ১০টি জেলায় দাওয়াতি কমর্কাণ্ড সমন্বয়ের কাজও তিনি করছিলেন বলে জানিয়েছেন।
গত এপ্রিলে ইমরান বগুড়ার সোনাতলার একটি বাড়িতে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে এই দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে পান। ওই বাড়ির মালিক শায়খ এনামুল। বৈঠকে জেএমিবর ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি দাওয়াতি শুরা বোর্ড গঠন করা হয়। দাওয়াতি শুরা বোর্ডের আমির নির্বাচিত হন ঢাকার নন্দীপাড়ার কুরআন-সুন্নাহ একাডেমির শায়খ আরিফ এবং নায়েবে আমির নির্বাচিত হন শায়খ এনামুল।
জেএমবির প্রধানের দায়িত্ব পালনকারী আবু মুহারিবের কাছ থেকে এই কমিটির অনুমোদন নিয়ে দেন সাজিদ। ধারণা করা হচ্ছে, সাজিদ জেএমবির সামরিক বিভাগের প্রধান। তিনি আবু মুহারিবের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতেন। এই যোগাযোগ হতো অ্যাপসের মাধ্যমে। সাজিদ ছাড়াও সানজিদ, আরমান ও লাল ভাইসহ আরও বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে তাঁর।
মুসা নিহত হওয়ার পর আইয়ুব বাচ্চু নামের একজন জেএমবির হাল ধরেছিলেন বলে সপ্তাহখানেক আগে জানায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম। এখন র্যাবের পক্ষ থেকে আবু মুহারিব ও সাজিদের কথা বলা হচ্ছে।
আসলে কোন তথ্যটি সঠিক জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জঙ্গিদের প্রায় প্রত্যেকের একাধিক নাম আছে।