এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : রাস্তা নেই, বাড়ী নেই, প্রায় কোটি টাকায় নির্মান করা হয়েছে একটি সেতু। আপাতত সড়ক নির্মাণের কোন পরিকল্পনাও নেই। ্এলাকাবাসির প্রশ্ন, কার স্বার্থে এই সেতু? সম্পতি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর ইউনিয়নের রতাল গ্রামে জন গুরুত্বহীন খালের ওপর এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ঘাঘর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে এ সেতুর অবস্থান।
সেতুর এক প্রান্ত গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া-পয়সারহাট সড়কের সাথে সংযুক্ত। কিন্তু অন্য প্রান্তে ২ কিঃ মিঃ জুড়ে শুধু ফসলের মাঠ। পায়ে হাটা পথও নেই। নেই জনবসতি। এ দুর্গম পথে মানুষ চলাচল করে না। অপরিকল্পিত এ সেতু এলাকার মানুষের কোন কাজে আসছে না। চালাচল করছে না কোন যান বাহন। এমন কি কোন পন্যও এ সেতু দিয়ে পরিবহন করা যাচ্ছে না। হিজলবাড়ি গ্রামের স্কুল ছাত্র সুমন বাড়ৈ বলেন, সড়ক ছাড়া খালের উপর অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের উত্তর কোটালীপাড়ায় বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের খালে সেতুর প্রয়োজন। সেখানে সেতু না করে রতালে সেতু নির্মাণ করে সরকারি টাকার অপচয় করা হয়েছে । এ সেতু এলাকাবাসির কোন কাজে আসছে না। কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশীষ বাক্চি বলেন,উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ৭৫ লাখ টাকা ব্যায়ে এ সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে। ডিপিতে রতাল খালের উপর সেতু নির্মাণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে সড়ক নির্মাণের কোন পরিকল্পনা নেই বলে তিনি জানান। সড়ক না থাকায় এ খালের উপর সেতু নির্মানের টেন্ডার আহবানে আমরা অপরাগতা প্রকাশ করি। কিন্তু ঘাঘর ইউপি চেয়ারম্যান নাদের আলী মিয়া রেজুলেশন দিয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদবির করে এ সেতু ডিপিতে অন্তভূক্ত করান। তিনি তখন সড়ক করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা এ সেতুর নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করি। রতাল গ্রামের আমীর হোসেন বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বাগান উত্তরপাড় গ্রামের বিশারদ বাড়ি সড়কের সাথে এ সেতুর অপর প্রান্তের সংযোগ সড়ক নির্মান করতে হবে। বিশারদ বাড়ি থেকে এ সেতুর দূরত্ব ২ কিঃ মিঃ। চেয়ারম্যান নাদের আলী মিয়া এ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হন। এ সড়ক ফসলী জমির উপর দিয়ে নির্মাণ করতে হবে। জমির মালিকরা জমি না দিলে এ সড়ক কখনোই নির্মিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই এ সেতু এলাকাবাসীর সহজে কোন কাজে আসবে না। এ ব্যাপারে ঘাঘর ইউপি চেয়ারম্যান নাদের আলী মিয়া বলেন,আমি রেজুলেশন দিয়ে ও উচ্চ পর্যায়ে তদবির করেএ সেতুর নির্মাণ করিয়েছি। এ সেতু এলাকাবাসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। আমরা জমির মালিকদের ম্যানেজ করে আগামী অক্টোবরের মধ্যেই এখানে রাস্তা করে দেব।
বিদেশ পাঠানোর কথা বলে ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ ঃ ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর নামে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ৬ ব্যক্তির কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন। প্রতারণার শিকার ওই ৬ ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার বুরুয়া গ্রামের মন্মথ ফলিয়ার স্ত্রী দুলালী ফলিয়া,বৈকন্ঠপুর গ্রামে মৃতঃ নিরাঞ্জন মল্লিকের স্ত্রী চঞ্চলা মল্লিক, জিতেন বাড়ৈর স্ত্রী পরিস্কার বাড়ৈ,মাছপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ অধিকারী,চকপুকুরিয়া গ্রামের দু-জন লিটন ভক্ত ও বিধু বৈরাগী। এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পাওনা টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীরা সম্প্রতি ঐ প্রতারকের বাড়ী একাধিকবার গেলেও কোন ভাল ফল মিলেনি। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভালো বেতনের চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার হাজরা বাড়ী গ্রামের বিরেন্দ্র নাথ বাড়ৈ,পিতা মৃত: কেদারী নাথ বাড়ৈ এবং কলাবাড়ী ইউনিয়নের বুরুয়া গ্রামের কার্ত্তিক সেন ,পিতা মৃত: অবিনাশ সেন এই দুজনে মিলে আমাদেরকে আমেরিকা পাঠানোর কথা বলে আমাদের ৬ জনের কাছ থেকে গত বছর জুনমাস থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কিস্তিতে মোট ৪ লক্ষ টাকা নেয় এবং পরিস্কার বাড়ৈ ব্যাতিত পাঁচজনের কাছ থেকে একটি করে ২০০ টাকার স্টাম্পও নেয়। এর মধ্যে দুলালী ফলিয়ার কাছ থেকে ১,৭২০০০ টাকা , চঞ্চলা মল্লিকের কাছ থেকে ৬৫,০০০ টাকা,পরিস্কার বাড়ৈর কাছথেকে ৪৫,০০০ টাকা, ফুলচাঁদ অধিকারীর কাছ থেকে ৫০,০০০ টাকা,লিটন ভক্তর কাছ থেকে ৩২,০০০ টাকা , বিধু বৈরাগীর কাছ থেকে ৩৩,০০০ টাকা টাকা করে নেয়। এর মধ্য পরিস্কার বাড়ৈ ব্যাতিত বাকী ৫জনার কাছ থেকে স্টাম্প নিয়ে থাকে এই প্রতারক চক্র। দুলালী ফলিয়ার স্বামী মন্মথ ফলিয়া বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য আমার স্ত্রীকে গরু বিক্রি করে ও সোনা বন্ধক রেখে এবং এনজিও থেকে সুদে টাকা নিয়ে ১,৭২০০০ লাখ টাকা ভিন্ন কিস্তিতে কার্ত্তিকের মাধ্যমে বিরেন্দ্র নাথ বাড়ৈ কে দিই। এখন সুদের টাকা পরিশোধ করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সংসারের খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমরা এখন সর্বশান্ত হয়ে পরেছি। লিটন ভক্ত ও বিধু বৈরাগী বলেন, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ৬৫০০০ হাজার টাকা ও ২০০ টাকার স্টাম্প নিয়ে নেয়। টাকা নেওয়ার বিষয় অস্বীকার করে বিরেন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোন কিছুই জানিনা এটা একটা বাজে দরবার এই অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। স্টাম্পের বিষয়ে তিনি সবকিছু অ-স্বীকার করেন।৪ লক্ষ টাকা নেওয়া এবং আমেরিকা পাঠানোর ব্যাপারো কার্ত্তিক সেন বলেন, আমি বিরেন্দ্র নাথ বাড়ৈ কে টাকা দিতে নিষেধ করেছি তাঁর পরেও টাকা দিয়েছে তাই ও টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তবে কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনোরঞ্জন বালা বলেন, এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা তবে ৬.৬.২০১৭ তারিখ সকালে আমার কাছে দুলালী ফলিয়া টাকা দেওয়ার ঘটনাটা জানায়।
গোপালগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত-১ আহত ৩
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে, এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। নিহত ফারুক মোল্লা (৩৮) উপজেলার চরবাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। চর-বাঁশবাড়িয়া গ্রাম এলাকায় মধুমতী নদীতে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কবীর তালুকদার। তিনি আরও বলেন, দুপুরে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে তিন ব্যক্তি মধুমতী নদীতে ট্রলারে বালু তুলছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ফারুক ট্রলার থেকে ছিটকে পড়ে নদীতে নিখোঁজ হন। বজ্রপাতে অন্য দুইজনও আহত হয়েছেন। পরে রাত ৮টার দিকে ফারুকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহতরা হলেন – চর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের এনায়েত তালুকদার (৪০) ও শরিফুল তালুকদার (২৮)। আহতদের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান কবীর। অপরদিকে গোপালগঞ্জের বৌলতলী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে বজ্রপাতে চয়ন (১৮) নামে এক কিশোর আহত হয়েছে। বৌলতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. ফরিদুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে কৃষ্ণপুর গ্রামে বজ্রপাতে চয়ন (১৮) নামে এক কিশোর আহত হয়েছে। এ বজ্রপাতে একটি গরু মারা গেছে ।