এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ শহরকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে ভিক্ষুকদের তালিকা ও যাচাই বাছাই শুরু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মঙ্গলবার বিকাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাচাই বাছাই শুরু হয়।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. শাম্মী আক্তার এ যাচাই বাছাই করছেন। যাচাবাছাইয়ের সময় তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় কিভাবে পূনর্বাসিত করলে তারা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিবেন। এ যাচাই বাছাইয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের ১৫৬টি আবেদনের মধ্যে থেকে ২৯টি আবেদন বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকী ইউনিয়নগুলোর আবেদন পর্যায়ক্রমে বাছাই করা হবে।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. শাম্মী আক্তার জানান, জেলা শহরকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আট লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। প্রকৃত ভিক্ষুকদের তালিকা করে তাদের পূর্ণবাসিত করা হবে। এর মধ্যে কাউকে মুদি ও স্টেশনারি দোকান এবং নারীদের গরু ও ছাগল কিনে দেওয়া হবে।
মুকসুদপুরে বাল্যবিবাহ রুখতে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলাধীন দিগনগর ইউনিয়নে পারিবারিক চাপে স্কুল পড়–য়া মেয়েকে জোড়পূর্বক
বাল্যবিবাহ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এ সংক্রান্তে গত ২৯/০৫/১৭ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ এলাকাবাসীর পক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করা হয়। লিখিত অভিযোগে জানা গেছে মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের পদ্দকান্দা গ্রামের শাখাওয়াত হোসেন ও ফরিদা বেগম তার স্কুল পড়–য়া মেয়ে ফারহানা আক্তার দোলাকে জোড়পূর্বক বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে (এ.এস.আই পদে) কর্মরত কর্মকতার সহিত জোড়পূর্বক অন্যায়ভাবে বাল্যবিবাহ দেন। বিষয়টি এলাকাবাসী তাৎক্ষণিকভাবে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে জানালেও কোন প্রতিকার না পেয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ও উত্তেজনা দেখা দিলে ঐ পুলিশ কর্মকর্তা রাতের আধারে পালিয়ে যান। বাল্যবিবাহ রুখতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সাইফুল ইসলাম তালুকদার নামে এক ব্যক্তি গোপালগঞ্জ ঝেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করে উক্ত বাল্যবিবাহ রুখতে এভং দোষীদের শাস্তি কামনা করেন।
কোটালীপাড়ায় ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব , ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ দেখতে আসেনি
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডবে ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট, গাছপালা লন্ডভন্ড হওয়ার পর ৭দিন পেরিয়ে গেলেও কেউ দেখতে আসেনি। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার উত্তর সীমান্ত বর্তী ১নং কলাবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের উপর দিয়ে গত ১ জুন সন্ধার পরে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়ে ঘর-বাড়ি, রামনগর বাজারের দোকান-পাট, মন্দির রাস্তার গাছপালা পড়ে লন্ড-ভন্ড হয়ে যায়। প্রত্যক্ষ দর্শি ভুক্তভুগী দেবদাশ হালদারের স্ত্রী সন্ধা হালদার (৪০) বলেন, আমার বড় টিনের ঘরের উপর গাছ পড়ে আমরা চাপা পড়ে ছিলাম, ঘর তছনছ হয়েগেছে কোন রকম প্রানে বেচে বের হয়েছি। রামনগর বাজারের ব্যবসায়ী- বাসি বল্লভের ছেলে জুড়ান বল্লভ (৪০), মৃত শুখময় চন্দ্র হালদারের ছেলে সুদর্শন হালদার (৫০), জগদীশ হালদারের ছেলে জীবন হালদার (৫৫), অরুন হালদারের ছেলে অমিয় হালদার (৩৫), জতিন্দ্রনাথ অধিকারীর ছেলে দিলিপ অধিকারী (৩৫), মৃত কালীপদ হালদারের ছেলে সিদ্দিশ্বর হালদার (৮৩) জিতেন্দ্রনাথ বাড়ৈর ছেলে জীবন বাড়ৈ (৪৫), মৃত শতিন্দ্র চন্দ্র গাইনের ছেলে শচিন্দ্রনাথ গাইন (৩৫), মৃত আ: রশিদ হালদারের স্ত্রী মায়া বেগম (৩৫) ও রণজিত বাড়ৈ (৩৫) বলেন- কয়েক সেকেন্ডের এই ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডবে আমাদের বাজারের দোকানপাট গাছপালা পড়ে তছনছ হয়ে যায়। ঘরে তলে চাপা পড়ে লোকজন আহত হয়। ক্ষতিগ্রস্থরা বলেন, আমাদের মুদি দোকান, টেইলারিং দোকান, স্যালুন, চা দোকান, রাইস মিল, ৫টি ভ্যান সহ গ্রেজের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। তাহারা আরও বলেন, ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও জেলা-উপজেলা প্রশাসন এমনকি কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও আমাদের খোজ-খবর নিতে আসেনি। এমতাবস্থায় সরকারী সহযোগীতা না পেলে ব্যবসা বাণিজ্য চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। এ ব্যাপারে কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন ও কোন সাহায্য সহযোগীতা দেওয়া হয়নি, তবে আমি নিজেই ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করে দিয়েছি।
কথিত ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় গৃহ বধুর মৃত্যু
এম আরমান খান জয়,গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া সীমান্তবর্তী উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সাতলা গ্রামের কথিত ডাক্তার রেজাউল করিমের ভূল চিকিৎসায় এক গৃহ বধুর মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় পশ্চিম সাতলা গ্রামের, প্রবাসী লুৎফর ভর্তির স্ত্রী তিন সন্তানের জননী, গৃহ বধু আমেনা বেগম (৩৩) পেট ও বুকের ব্যাথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে, রুগীর ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে ও সজনেরা তাকে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার শাহাদাত হোসেনের কাছে নিয়ে গেলে রুগির অবস্থা দেখে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কোটালীপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে পথিমধ্যে পশ্চিম সাতলা, মায়ের দোয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়গনষ্টিক সেন্টার ও ডক্টরস চেম্বার নামক স্থানে কথিত ডাক্তার রেজাউল করিমের কাছে নিয়ে যায়। কথিত এম বি বি এস ডক্তার রেজাউল করিম রুগিকে পর পর ৫টি ইনজাকশন পুশ করে ও ৩টি ট্যাবলেট খাইয়ে দেয়। তাতে রুগির অবস্থা আরও খারাপ হলে, রুগি নিজে ও সজনেরা মিলে রুগিকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে রেজাউল করিম কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরিশেষে রুগির অবস্থা বেগতিক দেখে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ছেড়ে দেয়। সঙ্গে থাকা সজনেরা জনান, পথিমধ্যে চৌধুরির হাট নামক স্থানে এসে পৌছালে রুগি আমেনা বেগমের মৃত্যু ঘটে। সে অবস্থায় তাকে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার, আমেনা বেগমকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। এ ব্যাপারে আমেনা বেগমের ছেলে হিমেল (১৩) এই প্রতিবেদককে জনান, কথিত এম বি বি এস ডাক্তার রেজাউল করিমের ভূল চিকিৎসায় আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে রেজউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি রুগিকে- ট্যাব ইনডোভা, ট্যাব মেলিক্সিন, ট্যাব ভি সেট খাইয়াছি এবং একটি ইনজেকশন পুশ করেছি। মৃত আমেনা বেগমের ভাই বলেন, কথিত ডাক্তার রেজাউল করিম এলাকার প্রভাব শালি ও লাঠিয়াল হওয়ায়, আমরা মামলা করতে সাহস পাচ্ছি না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলকাবাসি জানন, পূর্বে আরও অনেক রুগি এই রেজউল করিমের হাতে মারা গেলে ও কেউ মামলা করতে সাহস পায়নি। এ ব্যাপারে তারা উর্ধতন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, এমনি ভাবে আর যেন কোন তাজা প্রান ঝড়ে না যায়।