ঢাকা: লন্ডনে সর্বশেষ সন্ত্রাসী হামলার ৩ জঙ্গির মধ্যে ২ জনের নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা হলো খুররম ভাট (২৭) ও রাচিড রেদোয়ান (৩০)। হামলাকারী তৃতীয় জনের নাম পরিচয় জানা যায় নি। এর মধ্যে খুররম ভাট সন্ত্রাসী চক্রের রিংলিডার বা মূল হোতা। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, লন্ডন ব্রিজ ও বরো মার্কেটে হামলা চালানোর আগে থেকেই তাদের উগ্রপন্থার বিষয়ে জানতো বৃটিশ পুলিশ ও এমআই ৫।
এ নিয়ে বৃটিশ মিডিয়ায় বিভিন্ন ভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হচ্ছে। অনলাইন দ্য সান লিখেছে, এমআই ৫ যখন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছিল তখন চ্যানেল ৪-এর অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে খুররম ভাটকে। এ অনুষ্ঠানে তাকে দেখেছে ১২ লাখ দর্শক। অনলাইন দ্য টেলিগ্রাফ লিখেছে, খুররম ভাট পূর্ব লন্ডনের। ধারণা করা হচ্ছে, লন্ডন ব্রিজে নৃশংসতায় তারা যে তিনজন অংশ নিয়েছে তার নের্তৃত্বে ছিল সে। এসিসট্যান্ড কমিশনার মার্ক রাউলি বলেছেন, পুলিশ ও এমআই-৫ আগে থেকেই জানতো খুররম ভাট সম্পর্কে। তবে তারা সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছে এমন তথ্যপ্রমাণ তাদের কাছে ছিল না। অন্যদিকে রাচিডকা রেদোয়ান হলো মরক্কো-লিবিয়ান। তার বয়স ৩০ বছর। তার বিষয়েও পুলিশ জানতো। রেদোয়ান নিজে রচিড এলকাদর নামেও পরিচিত ছিল। প্রকৃত বয়স থেকে সে ৬ বছর বয়স কম দাবি করতো নিজের। খুররম ভাটের থেকে খুব বেশি দূরে তার বাস ছিল না। তৃতীয় হামলাকারীর নাম পাওয়া যায় নি। তবে সে বৃটিশ কোন নাগরিক নয়। লন্ডন ব্রিজ ও বরো মার্কেটে হামলা চালানোর আট মিনিটের মধ্যেই তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। খুররম ভাট সম্পর্কে টেলিগ্রাফ লিখেছে, লন্ডন ব্রিজ হামলার মূলহোতা সে। কখনোই সে তার সহিংস, উগ্রপন্থি দৃষ্টিভঙ্গি গোপন করতো না। তাকে মধ্য লন্ডনের রিজেন্টস পার্কে আইএসের কালো পতাকা নিয়ে নামাজ পড়তে দেখা গেছে। এমন ডকুমেন্টারি প্রচার করেছে চ্যানেল ৪। খুররম ভাট ও অন্য উগ্রপন্থিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত আল মুহাজিরিরে সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০১৫ সালে প্রায় ঘন্টাখানেকের জন্য পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু পরে কোন অভিযোগ ছাড়াই তাদের ছেড়ে দেয়। ২০১৬ সালে প্রচার করা ডকুমেন্টারিতে ক্যামেরার সামনে দেখা যায় খুররম ভাটকে। পুলিশ যখন ওই গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালাচ্ছিল তখন তাতে হস্তক্ষেপ করে সে। এক পর্যায়ে তাকে উত্তেজিত হতে দেখা যায়। সে পুলিশকে জিজ্ঞাসা করে- আপনারা কেন আমাকে স্পর্শ করছেন। এ ছাড়া আরো কিছু কারণে তার বিরুদ্ধে বৃটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করে। যখন খুররম ভাট লন্ডন ব্রিজে হামলা চালিয়েছে তখনও ২৭ বছর বয়সী এই যুবকের বিরুদ্ধে সেই তদন্ত চলমান ছিল। আল মুহাজিরিনের সঙ্গে খুররম ভাটের সম্পর্ক থাকায় গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।