ঢাকা : বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে বিশ্বের ৪৭টি দেশে বসবাসরত প্রবাসীদের মধ্যে ৭৮ বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যুদন্ড এবং ২৭৬জনের যাবজ্জীবন সাজা হওয়ার বিষয়টি সংসদে স্বীকার করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে স্বতন্ত্র সদস্য হাজী মোঃ সেলিমের এ সংক্রান্ত প্রশ্নে উত্থাপিত তথ্য স্বীকার করে এক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া উদ্যোগ ব্যাখ্যা করেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী সংসদকে জানান, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাঙালিদের মধ্যে ২৯ জন কর্মীর মৃত্যুদণ্ড রহিতকরণের জন্য সমঝোতা হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষমাপত্র দূতাবাসগুলোতে প্রেরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে দুবাইয়ে ২৩জনের মধ্যে ১৯জন এবং কুয়েতে দন্ডিত ১২জনের মধ্যে ১০জন রয়েছেন। ক্ষমাপ্রাপ্তদের মধ্যে ২১জন কর্মীর মৃত্যুদন্ড সংশ্লিষ্ট আদালত কর্তৃক রহিত করা হয়েছে। বাকি ৮ জনের রায় অপেক্ষমান রয়েছে।
মন্ত্রী সংসদেকে আরো জানান, হত্যাজনিত অপরাধের কারণে সৌদি আরবে ১২ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ২৩ জন, আবুধাবিতে ১ জন, কুয়েতে ১২ জন, বাহরাইনে ১ জন ও সিঙ্গাপুরে ১ জনসহ মোট ৫০ জন কর্মীকে সংশ্লিষ্ট দেশের আদলত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
এছাড়া হত্যার অভিযোগে সৌদি আরবে ১০ জন, কুয়েতে ১ জন, দুবাইয়ে ১৫ জন, ওমানে ৩ জন, কাতারে ৩ জন, মিশরে ১ জন ও বাহারাইনে ১ জনসহ মোট ৩৫ জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশের আদলতে মামলা বিচারাধীন রয়েছেন। অভিযুক্ত এসব বাংলাদেশী নাগরিকদের মুক্তকরণের জন্য দূতাবাসের মাধ্যমে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি সংসদকে আরো জানান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শরীয়া আইন বলবৎ থাকায় রায়ের আগে বা পরে সংশ্লিষ্ট কোর্ট ক্ষমার বিষয়ে উভয় পরিবারের মতামত গ্রহণ করে থাকে। এক্ষেত্রে দূতাবাস হতে বিষয়টি জানার পর ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে অভিযুক্ত ও নিহতের ওয়ারিশের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী সংসদকে জানান মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমুহের বাইরে সিঙ্গাপুরে ১ জন কর্মীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করা হলেও পরবর্তীতে আপিল রায়ে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এরআগে হাজী মোঃ সেলিম প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, (ক) ‘ইহা সত্য কিনা যে, বিভিন্ন অপরাধে বিশ্বের ৪৭টি দেশের মধ্যে আরব আমিরাতে ১৯জন, কাতারে ৭জন, জর্ডানে ৫জন, বাহরাইনে ৩জন, ওমানে ২ জন, কুয়েতে ৩জন, মিশরে ১ জন, মালয়শিয়ায় ৬জন এবং সিঙ্গাপুরে ২জনসহ মোট ৭৮জন বাংলাদেশীকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হইবে; আমিরাতে ১০৪জনসহ ২৭৬জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডেদন্ডিত করা হয়। আমিরাতের কারাগারে এক হাজারের বেশী বাংলাদেশী বিচারের অপেক্ষায় বন্ধি আছে।’ (খ) ‘উত্তর হ্যা সূচক হলে, তাদের মুক্তি বা সাজা মওকুফের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং কতটুকু সফল হয়েছে।’ জবাব দিতে গিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী লিখিত জবাবে হ্যা উল্লেখ করে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম ও সাফল্য ব্যাখ্যা করেন।