সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায় অপেক্ষমান রেখেছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। অর্থাৎ মামলার রায় যেকোনো দিন দেওয়া হবে। আজ বেলা সোয়া ১টার দিকে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা থাকা প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ এই মামলার শুনানিতে অ্যামিচি কিউরি হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতের নিয়োগ নিয়োগ করা ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর মধ্যে একজন ছাড়া সবাই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন বক্তব্য উপস্থাপন করেন, দুজন বক্তব্য রাখেননি। এদের মধ্যে কামাল হোসেন, এম আমীর-উল ইসলাম, টি এইচ খান, এ এফ হাসান আরিফ, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, এম আই ফারুকী, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ফিদা এম কামাল সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানান।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধানে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতেই ছিল। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের সময় ওই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়। পরে জিয়াউর রহমান সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী এনে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়েছিল। ২০১৪ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনীর পর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবীর করা একটি রিট আবেদনে গত বছর হাই কোর্ট সংসদের ওই পদক্ষেপ অবৈধ বলে রায় দেয়।
আপিলের শুনানিতে গত মঙ্গলবার নিজের অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করেন আজমালুল হোসেন কিউসি। পরে বক্তব্য রাখেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল ও এ জে মোহাম্মদ আলী। অ্যামিচি কিউরিদের বক্তব্য উপস্থাপন শেষে পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে ‘ইন্টারভেনার’ হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু। পরে আদালত আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেলকে বক্তব্য রাখতে বলেছিলেন। সেই শুনানি শেষ করে বৃহস্পতিবার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হলো।