অস্ট্রিয়া সফরের শেষ দিন ভিয়েনায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেছেন দেশটির ফেডারেল চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান কের্নের সঙ্গে। এ বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন দুই দেশের নেতা। সেই সঙ্গে অস্ট্রিয়ার ফেডারেল চ্যান্সেলারিতে দুই নেতার বৈঠকের পর নিয়মিত কূটনৈতিক আলোচনা আয়োজনে অস্ট্রিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে একমত হয়েছেন দুই নেতা। এর আগে শেখ হাসিনা নিজে দুই বার পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটিতে সফরে গেছেন। তবে স্বাধীতার পর গত সাড়ে চার দশকে এটাই ছিল বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম অস্ট্রিয়া সফর।
পররাষ্ট্র সচিব আরো জানান, ভিয়েনায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বন্ধের বিষয়ে আলোচিত হয়েছে। সেখানে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রুখতে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছেন শেখ। সামরিক চাপ প্রয়োগ করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা যাবে না। বরং এর বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তারের নাগরিকদের সচেতন করতে হবে এবং প্রতিরোধ গড়তে হবে।
উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতময় পরিস্থিতি শরণার্থী সমস্যার সৃষ্টি করছে। আবার এই অবস্থাই সন্ত্রাসের জন্ম দিচ্ছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলরকে জানান, প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করছেন। মানবিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দেওয়া হলেও মিয়ানমাকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের কথা বলেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলরকে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্মাণের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। এ ধরনের আরও স্থাপনা নির্মাণে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরব-আমেরিকান সম্মেলন উপলক্ষে সম্প্রতি শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফরের বিষয়েও খোঁজ নিয়েছেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ফেডারেল চ্যান্সেলারি থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটে পাশেই অস্ট্রিয়ার ফেডারেল প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে যান শেখ হাসিনা। সেখানে সাক্ষাৎ হয় প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ফন ডের ব্যালনের সঙ্গে।