নিম্নচাপ হচ্ছে মোরা। ১০ নম্বর বিপৎসংকেত বহাল

Slider জাতীয়

d47c2efe7bc4aac4ab8f864d0328c203-592d12e00e9ed

নিজস্ব প্রতিবেদক; ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় মোরা বৃষ্টি ঝরিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার উপকূলকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দীন আহমেদ  বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশেই অবস্থান করছে। এটি বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়, তাই আরও বৃষ্টি ঝরিয়ে এটি দুর্বল হবে। ঘূর্ণিঝড়-পূর্ববর্তী আবহাওয়ায় ফিরে যেতে আরও ১০-১২ ঘণ্টা লাগবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের কর্তব্যরত আবহাওয়াবিদ আতিকুর রহমান বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রামে প্রচুর বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আজ দুপুর পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার। মোরার প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তাও জারি করা হয়েছে। এখনো চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত বহাল রয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে।

মোরা অতিক্রম করে গেলেও এর বর্ধিতাংশের প্রভাবে মাঝেমধ্যে চট্টগ্রামে দমকা বাতাস বইছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি বলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোরা আজ সকাল ছয়টার দিক থেকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এটি কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ (১৬ নম্বর) বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মোরা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সকাল ছয়টার দিকে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজারের ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে সকাল আটটার দিকে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন ও টেকনাফে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। ঝড়ে এসব এলাকায় বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে বহু গাছপালা।

 

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান খান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভোররাত চারটার পর থেকে সেন্ট মার্টিন লন্ডভন্ড হতে শুরু করে। ছয়টা নাগাদ সেন্ট মার্টিনের দুই শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। এর মধ্যে বেশি রয়েছে কাঁচা ঘর। আধা পাকা ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ ঘরের চালা উড়ে গেছে। এ ছাড়া বহু গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। যাঁরা আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা সবাই খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

বেলা একটার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজি আবদুর রহমান  জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরায় কক্সবাজারে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে দুজন গাছ চাপায় এবং একজন আতঙ্কে মারা গেছেন। গাছ চাপা পড়ে নিহত দুজন হলেন জেলার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারার পূর্ব ডোমখালীর রহমত উল্লাহ (৫০) এবং একই উপজেলার পূর্ব বড়হেউলা ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার সায়েরা খাতুন (৬০)। আর কক্সবাজার পৌরসভার নুনিয়াচটা আশ্রয়কেন্দ্রে আতঙ্কে মারা গেছেন মরিয়ম বেগম (৫৫)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *