রাতুল মন্ডর শ্রীপুর, (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় বেত প্রয়োগে চ্যাম্পিয়ন বলে জানা গেছে। কারনে অকারনে বিভিন্ন সময় বাঁশের তৈরি অথবা কোন লাঠি দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শিক্ষার্থীদের উপর বেত্রাঘাত প্রয়োগ করে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে ফুটবল খেলার অপরাধে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শওকত আলী মৃধা ১৮ জন শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের মাঠে ফেলে বেত্রাঘাত করে। এঘটার পর আহত এক শিক্ষার্থীর পিতা সামসুল হুদা ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ খবর পেয়ে রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রমজান ও গ্রীস্মের ছুটি কাটাচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। যোগাযোগ করা হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মবিনুল ইসলামের সাথে। তিনি আমাদের বিদ্যালয়েল সামনে দাঁড়াতে বলেন। কিছুক্ষণ পর এসে বিদ্যালয়ের ফুল মুলফটক খুলে অফিস কক্ষে নিয়ে যায়। অফিস কক্ষে ঢুকতেই চোখে পরে প্রধান শিক্ষককের টেবিল। সেখানে পরে আছে ৫টি বেত। এর মধ্যে বাঁশের তৈরি ৩টি বাকি ২টি বাজারের কেনা বেত। প্রধান শিক্ষককের কাছে জানতে চাওয়া হয় ওই কেন বেত দিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। তিনি এক কথাই উত্তর দিয়ে বলেন, বেয়াদবি করেছে তাই প্রত্যেককে বিদ্যালয়ের সভাপতি বেত্রাঘাত করেছেন। স্কুলে কখনো বেত্রাঘাত করা হয় কিনা এতে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে করা হয়। আর এমনিতে ভয়ভীতি দেখানো হয়ে থাকে বেত দিয়ে। তার টেবিলে এতো বেতের সমাহার কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা বেশি বেয়াদবি করে তাদের অফিসে এনে শাস্তি দেওয়া হয়। তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, আমি সহজ সরল তাই সত্যি কথা বলে দিছি।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক অভিভাবক এ ব্যাপারে অভিযোগ করে, এ বিদ্যালয়ের প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকরা বেত্রাঘাত করে থাকে। শিক্ষার্থীরা বেত্রাঘাতের শিকার হলে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এসে হৈহুল্লর করে যেতেও দেখা যায় অনেক সময়।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনার বিচার ও প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে বিদ্যালয় থেকে অপসারনের দাবীতে বরমী বাজারে সোমবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা টানা এক ঘন্টা মানববন্ধন পালন করেছে। এসময় তারা বিভিন্ন প্ল্যা কার্ড হাতে নিয়ে বিভোক্ষ প্রদর্শনও করে।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. শওকত আলী মৃধার ফোনে একাধিক বার যোগোযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনা আকতার জানান, ঘটনার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে তলব করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।