সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। উপস্থিত ছিলেন শ্রমসচিব মিকাইল শিপার, ডিআইএফইর মহাপরিদর্শক সামছুজ্জামান ভূঁইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি, গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি লীমা ফেরদৌস প্রমুখ।
বৈঠকে শ্রমিকনেতা লীমা ফেরদৌস বলেন, অনেক পোশাক কারখানার মালিক এমন সময় বেতন-ভাতা দেন যে পোশাকশ্রমিকেরা না পারেন ঈদের জামা কিনতে, না পারেন বাসের টিকিট কাটতে। তাই তিনি পোশাকশ্রমিকদের ১৫ রোজার মধ্যে ঈদ বোনাস ও বকেয়া ওভারটাইম এবং ঈদের ছুটির আগেই জুন মাসের ২০ দিনের বেতন পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘পোশাকশিল্পের অবস্থা খুবই নাজুক। গত ১০ বছরে আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ থাকলেও গত ১০ মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ২১ শতাংশ। আমরা কিন্তু কঠিন সময় পার করছি। তারপরও শ্রমিকেরা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদ্যাপন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নেব।’
ঈদ বোনাস পরিশোধের সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না করে মোহাম্মদ নাছির তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব প্রতিটি কারখানা যেন উৎসব ভাতা পরিশোধ করে।’ আর জুন মাসের বেতনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মালিক-শ্রমিকের সম্পর্কের ভিত্তিতে ১০-১৫ দিনের মজুরি আমাদের মালিকেরা পরিশোধ করবেন। সেই প্রতিশ্রুতি আমরা দিতে পারি।’
পরে বৈঠক শেষে জানতে চাইলে বিজিএমইএর এই সহসভাপতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০ রোজার মধ্যেই শ্রমিকেরা বেতন-ভাতা পেয়ে যাবেন। সেটি নিশ্চিত করতে প্রতিবছরের মতো এবারও বিজিএমইএতে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হবে। তদারকি করা হবে।’
কয়েক বছর ধরে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট–বিষয়ক কোর কমিটির সভায় ঈদ বোনাস পরিশোধের একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও এবার হয়নি। আজকের সভার প্রধান ইস্যু ঈদের আগে সুষ্ঠুভাবে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নিয়ে আলোচনা হয়েছে কম। সভার অধিকাংশ সময়জুড়ে নিবন্ধন বিহীন ফেডারেশন ও তাদের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত শ্রমিকনেতা সিরাজুল ইসলাম ও লীমা ফেরদৌস অভিযোগ করে বলেন, নিবন্ধনবিহীন ফেডারেশন নিয়মতান্ত্রিক শ্রমিক আন্দোলন করছে না। সে জন্য শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
পরে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, যেসব শ্রমিক ফেডারেশন নিবন্ধিত নয়, তাদের তালিকা করা হবে। তারপর তাদের চিঠি দিয়ে বলা হবে, শ্রম আইন অনুযায়ী অনিবন্ধিত সংগঠন শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করাটা নিয়মের বাইরে। এ ছাড়া যেসব এনজিও শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে, তাদের অনুমতি ও সক্ষমতা আছে কি না, সেটিও খোঁজখবর নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।