নিজস্ব প্রতিবেদক ; নীলফামারী জেলা শহরের সবুজপাড়া মহল্লার পত্রিকার হকার মোবারক খানের মেয়ে রুমা আক্তার, নীলফামারী সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের অনার্সের চতুর্থ বর্ষে পড়েন। মোবারক খানের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট রুমা। তাই বাড়ির সকলে তাকে আদরের নামে ডাকে ইতিমনি। গত কয়েকমাস ধরে ব্রেইন টিউমারে ভুগছেন রুমা। বেশ কিছুদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজধানীর শেরেবাংলানগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে। কিন্তু বাড়ি থেকে নিয়ে আসা টাকা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শেষ হয়ে যাওয়ায় কোনো উপায় না পেয়ে পরবর্তী সব চিকিৎসা ফেলে অবশেষে বোনকে নিয়ে বাড়ি চলে যান রুমার ভাই মোটর মেকানিক রনি।
এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অর্থের রুমার চিকিৎসা আটকে যাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। সাহায্য চেয়ে লেখালেখি হয় অনেক। সাধ্যমত অর্থ দিয়ে এগিয়ে আসেন দেশ ও বিদেশের কয়েকজন। তবে যে টাকা উঠে তা দিয়ে রুমার চিকিৎসা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে না। এরপর সাহায্য চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন সিলেট জেলা যুবলীগ নেতা সাজলু লস্কর। তাঁর দেওয়া পোস্টে কমেন্ট করে কয়েকজন সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পোস্টটিতে কমেন্ট করে সাজলু লস্কর-কে ধন্যবাদ জানিয়ে রুমার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। পরে মোবাইলেও জাকির সাজলু লস্করকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ ব্যপারে সিলেট জেলা যুবলীগ নেতা সাজলু লস্কর বলেন- ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত রুমা নামের মেয়েটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে আবারো মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন জাকির। জানা গেছে, রুমাকে জাকিরের উদ্যোগে পাঠানো হয়েছে ভারতে। তামিলনাড়ুর ভেলরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে তার অপারেশনের প্রস্তুতি চলছে। রুমাকে নিয়ে ভারত গেছেন তার ভাই রনি। চলতি মাসের ৭ তারিখে সন্ধ্যা ৭টার রেলযোগে দুই ভাই-বোন রওনা হন ভারতের উদ্দেশে। রুমার যাতায়াত ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা তুলে দিয়েছেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক। আর তারই নির্দেশে দেশে তার চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ভারতে যাওয়ার ব্যবস্থার তদারকি করেন সোহরাওয়ারর্দী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল হোসাইন।
শাকিল বলেন, জাকির ভাই রুমার চিকিৎসার বিষয়ে যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব আমাকে দেওয়ার পর ১০ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের কাছে রুমাকে দেখানো হয়। এম আর আই রিপোর্টে রুমার মাথার সামনের দিকে ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে। ডাক্তার অপারেশনের পরাপর্শ দেন। আমরা রুমার পরিবারকে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিলে তারা এতে রাজি হয়। এবং রুমাকে কয়েকদিনের জন্য দেশের বাড়িতে নিয়ে যায়।