স্পোর্টস ডেস্ক ঃ আজকাল ক্রিকেট অনেকটাই ব্যাটসম্যানদের খেলায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু সেই উইকেট নিতে এবং ম্যাচ জিততে এখনো আপনাকে বোলারদের ওপরই নির্ভর করতে হবে। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পিচ ও সিম সহায়ক পিচের কারণে বোলার-ব্যাটসম্যান ভারসাম্য থাকতে পারে। এমন বিচার থেকেই আমাদে শীর্ষ পাঁচ বোলার বেছে নেয়া।
১. মিচেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া) : আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার আশা ভরসার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন মিচেল স্টার্ক। বেশ কিছু দিন ধরেই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বোলিং আক্রমণ বিভাগে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন পেসার মিচেল স্টার্ক। বাঁ-হাতি ২৭ বছর বয়সী এ সুয়িং বোলার সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে আছেন এবং চলতি বছরের শুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন।
ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত ৬৫ ম্যাচে ১২৯ উইকেট শিকার করে স্টার্ক ইতোমধ্যেই নিজকে একজন বিশ্ব মানের বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মারাত্মক কিছু ইনজুরিতে পড়লেও স্টার্ক প্রতিবারই আরো বেশি ধারালো ও আত্মনিবেদিত হয়ে মাঠে ফিরেছেন। চলতি বছর আইপিএলে অংশ নেয়া কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি। আইপিএল না খেলে বরং তিনি আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে নিজের বোলিং নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
২. মোহাম্মদ আমির (পাকিস্তান) : আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তান দলের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ আমির। পাকিস্তান ক্রিকেটের পরবর্তী ‘বিগ থিং’ হিসেবে বিবেচনা করা হতো আমিরকে। কিন্তু নিজকে পুরোপুরি মেলে ধরার আগেই স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তবে আইসিসির পাঁচ বছরের নিষিদ্ধাদেশ কাটিয়ে ২০১৬ সালে পুনরায় খেলায় ফিরে স্বল্প সময়ের মধ্যেই নিজের জাত চিনিয়েছেন। ২০১৬ এশিয়া কাপ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান দলের বোলিং বিভাগে বড় ভুমিকা পালন করেন তিনি। ব্যাটিং অর্ডারে সব শেষে মাঠে নেমে ওয়ানডে ক্রিকেটে হাফ-সেঞ্চুরি করা পাকিস্তানের প্রথম ক্রিকেটার তিনি। এখন এ সুয়িং সম্রাট আবারো পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জয় হতে পারে তার ফিরে আসার যথার্থ শিরোনাম।
৩. কাগিসো রাবাদা (দক্ষিণ আফ্রিকা) : বর্তমানে আইসিসি বোলার র্যাংকিংয়ে পঞ্চম স্থানে আছেন কাগিসো রাবাদা। মাত্র ২ বছর আগে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় রাবাদার। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা দলে তার প্রভাব দিনকে দিন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ পর্যন্ত ৩৪ ম্যাচে ৫৭ উইকেট শিকার করে নিজের ধারাবাহিকতার প্রমাণ দিয়েছেন এবং পারফরমেন্স করেই র্যাংকিংয়ের পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছেন রাবাদা।
চলতি বছর শুরুর দিকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন তরুণ এ পেসার। সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন তিনি। সদ্য শেষ হওয়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলেছেন রাবাদা। যদিও তার পারফরমেন্স চোখ ঝলসানো ছিল না। তবে বল হাতে তিনি ছিলেন খুবই সুশৃংখল। ডেল স্টেইন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে থাকায় প্রোটিয়াদের পরবর্তী পেস সুপারহেডের ভূমিকা পালন করবেন রাবাদা।
৪. ভুবনেশ্বর কুমার (ভারত) : ইংলিশ কন্ডিশনে ভারতের তুরুপের তাস হতে পারেন ভুবনেশ্বর কুমার। ভারতীয় দলের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ডেথ ওভারে বোলিং। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হতে পারেন ভুবনেশ্বর কুমার। যিনি গত দুই তিন বছর যাবত স্লগ ওভারে ভারতীয় দলকে সাহায্য করছেন। ভারত ও আইপিএল অধিনায়কদের তার উপড় নির্ভর করার অন্যতম কারণ হলো স্লগ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের অসাধারণ লাইন লেন্থের বোলিং। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে সর্বোচ্চ ২৫ উইকেট শিকার করেছেন ভুবনেশ্বর। তার ইকোনোমি রেট ছিল ৭ এর কম। যা তার আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অসাধারণ কিছু করার ইঙ্গিত বহন করে।
৫. মুস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ) : বাংলাদেশ দলের নতুন পেস বোলিং সেনশেসন ২১ বছর বয়সী মুস্তাফিজ নিজ মাঠে ২০১৫ সালে শক্তিশালি ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপকে ধ্বসিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঝড় তোলেন। তরুণ এ তারকা ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচেই পাঁচ উইকেট শিকার করা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার। এরপর আর তাকে পিছনের তাকাতে হয়নি।
ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি লিগে নিয়মিত ক্রিকেটার এখন তিনি। ২০১৬ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সানরাইজার্স হায়দারাবাদের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ৩৬ উইকেট শিকার করে সাম্প্রতিক সময়ে নিজ দলের সাফল্যে মুখ্য ভূমিকাও রাখছেন তিনি। এ বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আবারো দলের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন তিনি।