হাফিজুল ইসলাম লস্করঃ সিলেটের দৃষ্টিনন্দন টিলাগড় ইকোপার্ক হল বাংলাদেশের তৃতীয় ইকোপার্ক। চা বাগান সমৃদ্ধ পাহাড়ে ঘেরা প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের টিলাগড় নামক স্থানে এ ইকোপার্ক।
টিলাময় এই ইকো পার্ক যে কোন এক ছুটির বিকেলে বেড়াতে যাওয়ার জন্য আদর্শ জায়গা। সিলেটবাসীরা তো বটেই, বাইরের অঞ্চলের ভ্রমণকারীরাও নানান পর্যটন স্থল ভ্রমণের পাশাপাশি এক ফাঁকে ঘুরে আসতে পারেন এখানে।
প্রকৃতিক সৌন্দর্যের কি নেই এই ইকোপার্কে। গাছ-গাছালি বেষ্টিত ইকোপার্ক যেন সবুজ ছায়া চাদরে ঘেরা। রয়েছে গাছে-গাছে পাখির কূজন। নিরিবিলি পরিবেশ পেতে হলে অবশ্য এড়িয়ে যেতে হবে ছুটির দিন। ছোট-বড় টিলার ফাঁক দিয়ে বয়ে গেছে একটি ছড়া। তার ছল ছল শব্দ মনে আনন্দের দোল দেয়।
পার্কের নিগূঢ় পরিবেশ যেমন আপনার মনকে ভালো করে দেবে তেমনি এর জীব বৈচিত্র দেখতেও ভালো লাগবে। শিয়াল, বানর, খেঁকশিয়াল, খরগোশ, সিভিট, বনমোরগ, মথুরা, হনুমান এবং ময়না, টিয়া, ঘুঘু, হরিডাস, সাত ভাই চম্পা পাখি ইত্যাদি প্রাণীর দেখা পাবেন এখানে।
আবার নানান জাতের গাছের মধ্যে আছে চাপালিশ, শাল, গর্জন, চম্পাফুল, জারুল, মিনজিরি, চাউ, ঝাউ, কড়ই, জলপাই, আম, কাঁঠাল, নারিকেল, সুপারি, কামরাঙ্গা, চালতা, আগর, কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, বাজনা, নাগেশ্বর, বকুল, হিজল, ডুমুর ইত্যাদি গাছের সমাহার।
টিলাগড় রিজার্ভ ফরেস্টের ১১২ একর জায়গা জুড়ে এই ইকো পার্ক গঠন করা হয়। ২০০৬ সালে স্থাপিত হওয়ার পর থেকে আজ অবধি এটি এলাকার মানুষের অবকাশ যাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা হয়ে আছে।
কীভাবে যাবেন: বাংলাদেশের যেকোন স্থান থেকে সিলেটের ইকোপার্কে যেতে হলে প্রথমেই বাংলাদেশের রাজধানী আসতে হবে। ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার সরাসরি বাস রয়েছে। কিছুক্ষণ পর পরই ছাড়ে বাসগুলো। ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ আর মহাখালী থেকে বাস পাবেন। ট্রেনে আসতে চাইলে কমলাপুর থেকে আসতে পারেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টা ৪০ মিনিটে পারাবত আর দুপুর ২টায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ছেড়ে যায় সিলেটের উদ্দেশ্যে।
একমাত্র বুধবার ব্যতিত সাপ্তাহের প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। সিলেট থেকে সিএনজি বা অটো যোগে চলে যাবেন টিলাগড় ইকোপার্ক।
কোথায় রাত্রী যাপন করবেন ::
সিলেটে মেট্রো, সুপ্রিম, অনুরাগ, রোজভিউ, সিলভার সাইন ডিলাক্স, ভিলেজ গার্ডেন, ইস্টার্ন গেইটসহ অসংখ্য ছোট বড় নানান মানের হোটেল আছে। চাহিদামত হোটেলে উঠতে পারেন।